২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১১:৫০ অপরাহ্ণ, মার্চ ১৬, ২০১৮
কলম্বো : নিদাহাস ট্রফির অঘোষিত সেমিফাইনালে ছক্কা হাঁকিয়ে বাংলাদেশকে ত্রিদেশীয় টি-২০ সিরিজের ফাইনালে তুললেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। শ্রীলঙ্কার ছুঁড়ে দেওয়া ১৬০ রানের টার্গেট ১ বল ও ২ উইকেট হাতে রেখে টপকে গেছে লাল-সবুজের জার্সিধারী টাইগার বাহিনী।
মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ১৮ বলে ৪৩ রান করে ম্যান অফ দ্যা ম্যাচ হয়েছেন। তিনি ২০ তম ওভারে ৪র্থ ও ৫ম বলে যথাক্রমে ৪ ও ৬ মারেন। এতে অবিশ্বাস্য ও নাটকীয় ভাবে জয়লাভ করে বাংলাদেশ। এছাড়া তামিম ইকবাল ৫০ রান করেছেন। বাংলাদেশের জয়ের জন্য দরকার ছিল ১৬০ রান। নিদাহাস ট্রফিতে বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার সামনে ছিল একই সমীকরণ। জিতলে ফাইনাল, হারলে বিদায়। ফাইনালে উঠতে হলে এ ম্যাচটা জিততেই হতো বাংলাদেশকে। হয়েছেও তাই! যাদের স্বাধীনতা দিবস উদযাপনের টুর্নামেন্ট সেই শ্রীলঙ্কা বিদায় করে দিয়ে। তার আগে একটি বলকে কেন্দ্র করে প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে ছিল তুমুল উত্তেজনা। সাকিব তো তার দলকে মাঠ থেকে চলে আসতেই বললেন। চলে আসলে কি আর টি-টুয়েন্টির ইতিহাসে বাংলাদেশের এখন পর্যন্ত সেরা এই জয়ের দেখা যেত!
শুক্রবার বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় কলম্বোর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে টস জিতে ফিল্ডিংয়ে বাংলাদেশ। টস জয়ের সুসংবাদ নিয়ে মাঠে নেমেছে বাংলাদেশ। এছাড়া ফিরেছেন নিয়মিত অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। ফিরে আসার ম্যাচে টসটাও জিতে নিয়েছেন তিনি। বেছে নিয়েছেন ফিল্ডিং। টস জিতেই শ্রীলঙ্কাকে ব্যাটিং করার আমন্ত্রণ জানিয়েছেন টাইগার অধিনায়ক।
এরপর কভার দিয়ে তুলে মারতে গিয়ে মুশফিক ফেরার পরও আশা হারায়নি বাংলাদেশ, তামিম যে ছিলেন। টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের একমাত্র সেঞ্চুরিয়ান ইতিহাস সৃষ্টি করা সেই ইনিংসের পর আর কখনো ফিফটিও করতে পারেননি। আজ সে দুঃখটাও মিটল। ৪১ বলে ফিফটি করা তামিম কিনা আউট পরের বলেই! কোনো চার ছক্কা না মেরে ১০ রান করা সৌম্য আউট ৪ বল পরেই।
৩১ বলে ৫১ রানের সমীকরণ মাথায় নিয়ে মাঠে নামলেন সাকিব আল হাসান। বিদায় নিলেন দলকে ১২ বলে ২৩ রানের সমীকরণে। এর মাঝে ৯ বলে ৭ রানই করতে পেরেছেন সাকিব। দলকে জেতানোর সব দায়দায়িত্ব সিরিজের আগের তিন ম্যাচের অধিনায়কত্ব করা মাহমুদউল্লাহর কাঁধেই পড়ল। শেষ ওভারে ১২ রানের সমীকরণ, প্রতি বলে দুই রান। প্রথম দুই বল নষ্ট হলো, কোনো রান এল না। সমস্যা একটাই, স্ট্রাইকে ছিলেন না মাহমুদউল্লাহ। তবে শেষপর্যায়ে চাপের মুখে ১৮ বলে ৪৩ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলে দলকে জয়ের বন্দরে নিয়ে যান মাহমুদউল্লাহ। আর এই সঙ্গে স্বাগতিক শ্রীলঙ্কা ২ উইকেটে হারিয়ে ফাইনালে জায়গা করে নিল বাংলাদেশ।
প্রথমে ব্যাট করে পাওয়ার প্লেতে নেই ৪ উইকেট। দলীয় ৪১ রানে হারায় ৫ উইকেট। সাকিব-মোস্তাফিজদের দুর্দান্ত বোলিংয়ে ভিন্ন কিছুর ইঙ্গিতই দিচ্ছিলো। কিন্তু শুরুর চাপ ধরে রাখতে ব্যর্থ হয় টাইগার বোলাররা। আটকে রাখতে পারেনি শ্রীলঙ্কান ব্যাটসম্যানদের। ষষ্ঠ উইকেটে কুশল পেরেরা ও অধিনায়ক থিসারা পেরেরার ৯৭ রানের জুটিতে লড়াকু সংগ্রহই গড়েছে স্বাগতিকরা। নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১৫৯ রান তুলে নিয়েছে দলটি। ফলে ফাইনালে যেতে টাইগারদের লক্ষ্য ১৬০ রান।
কলম্বোর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে শুক্রবার টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নামে শ্রীলঙ্কা। শুরুতেই টাইগারদের বোলারদের দুর্দান্ত বোলিংয়ে দারুণ চাপে পরে দলটি। ৪৮ দিন পর মাঠে ফিরে ইনিংসের শুরু করেন অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। তবে উইকেট পান নিজের দ্বিতীয় ওভারে। দানুশকা গুনাথিলাকাকে লং অনে সাব্বিরের রহমানের তালুবন্দি করেন সাকিব। পরের ওভারে আঘাত হানেন মোস্তাফিজ। ভয়ংকর ব্যাটসম্যান কুশল মেন্ডিসকে ফেরান কাটার মাস্টার। মিড উইকেটে সহজ ক্যাচ ধরতে কোন ভুল করেন সৌম্য সরকার।
এক ওভার পর আবার বোলিং করতে এসে লঙ্কান শিবিরে জোড়া আঘাত হানেন মোস্তাফিজ। প্রথমটি রানঅউটের সুবাদে। মিরাজের কাছ থেকে বল পেয়ে ঝাপিয়ে পরে উইকেট ভেঙে আউট করেন উপুল থারাঙ্গাকে। এর এক বল পরে শিকার করে দাসুন সানাকাকে। মোস্তাফিজের অফকাটার ব্যাটের কানা ছুঁয়ে চলে যায় উইকেটরক্ষক মুশফিকুর রহীমের হাতে। এরপর দলীয় ৪১ রানে লঙ্কান শিবিরে আবার আঘাত হানেন টাইগাররা। এবার মেহেদী হাসান মিরাজ। তবে ক্যাচ ধরেছেন সেই মোস্তাফিজ। মিরাজের বলে সুইপ করতে চেয়েছিলেন জিবন মেন্ডিস। তবে ঠিকভাবে করতে না পারায় বল চলে শর্ট ফাইন লেগে দাঁড়ানো মোস্তাফিজের হাতে।
৪১ রানে প্রথম সারীর পাঁচ উইকেট তুলে নিয়েও চাপে রাখতে পারেনি টাইগাররা। অধিনায়ক থিসারা পেরেরাকে নিয়ে দারুণ এক জুটি গড়েন কুশল পেরেরা। তাদের ৯৭ রানের জুটিতে ভর করেই ১৫৯ রানের লড়াকু সংগ্রহ পায় স্বাগতিকরা। দুর্দান্ত ফর্মে থাকা কুশল পেরেরা এদিনও তুলে নেন হাফসেঞ্চুরি। টুর্নামেন্টের চার ম্যাচে এটা তার তৃতীয় ফিফটি। লঙ্কানদের ইনিংস মেরামত করে ৬১ রানের ইনিংস খেলেন তিনি। ৪০ বল মোকাবেলা করে ৭টি চার ও ১টি ছক্কার সাহায্যে নিজের ইনিংস সাজান এ ব্যাটসম্যান। থিসারা পেরেরাও তুলে নেন হাফসেঞ্চুরি। খেলেন ৫৮ রানের ইনিংস। ৩৭ বলে সমান ৩টি করে চার ও ছক্কার সাহায্যে এ রান করেন তিনি।
প্রথম দুই ওভারে দারুণ বোলিং করলেও শেষ দুই ওভারে ভীষণ খরুচে ছিলেন মোস্তাফিজ। শেষ দুই ওভারে ৩৫ রান দিয়েছেন তিনি। শেষপর্যন্ত ৩৯ রানের খরচায় ২টি উইকেট পান কাটার মাস্টার। ১টি করে উইকেট পেয়েছেন রুবেল, সৌম্য, সাকিব ও মিরাজ। তবে এদিন দলে বিশেষজ্ঞ বোলার হিসেবে দলে থাকলেও নাজমুল ইসলাম অপুকে কোনো ওভার করাননি সাকিব।
বাংলাদেশ দল: তামিম ইকবাল, সৌম্য সরকার, লিটন দাস, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ, সাকিব আল হাসান (অধিনায়ক), সাব্বির রহমান, মেহেদী হাসান, মোস্তাফিজুর রহমান, রুবেল হোসেন ও নাজমুল ইসলাম।
শ্রীলঙ্কা দল: থিসারা পেরেরা (অধিনায়ক), দানুশকা গুনাথিলাকা, কুশল মেন্ডিস, কুশল পেরেরা, উপুল থারাঙ্গা, দাসুন শানাকা, ইশুরু উদানা, জিবন মেন্ডিস, আকিলা ধনঞ্জয়া, আমিলা আপনসো, নুয়ান প্রদিপ।
EDITOR & PUBLISHER :
DR. ARIF AHMED MOMTAZ RIFA
MOBILE : 01715110022
PHONE : 0821 716229
Office : Central Market (1st floor),
Bandar Bazar (Court Point),
Sylhet – 3100, Bangladesh.
E-mail : sylhetsangbad24@gmail.com
Hello : 01710-809595
Design and developed by M-W-D