প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলন সোমবার

প্রকাশিত: ৫:৪৪ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০১৮

প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলন সোমবার

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার সদ্য সমাপ্ত ইতালি ও ভাটিকান সিটির সফর বিষয়ে সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে ভাষণ দেবেন।

প্রেস সচিব ইহসানুল করিম জানান, ‘প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে আগামীকাল (সোমবার) বিকাল ৪টা ৩০ মিনিটে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।’ খবর বাসসের

শেখ হাসিনা গত ১১ থেকে ১৪ ফেব্রুয়ারি ইতালি ও ভাটিকান সিটিতে চারদিনের সরকারি সফর করেন।
প্রধানমন্ত্রী আন্তর্জাতিক কৃষি উন্নয়ন তহবিলের (ইফাদ) প্রেসিডেন্ট গিলবার্ট এফ হংবো-এর আমন্ত্রণে ইফাদে’র বার্ষিক পরিচালনা পর্ষদের বৈঠকে অংশগ্রহণ করেন।

প্রধানমন্ত্রী পোপ ফ্রান্সিসের আমন্ত্রণে ভাটিকান সিটির হলি সি সফর করেন। তিনি পোপ ও ভাটিকান সিটির সেক্রেটারি অব স্টেট কার্ডিনাল পিয়েত্র পারোলিনের সঙ্গেও বৈঠক করেন।

খালেদা জিয়ার প্রিয় ব্যক্তিত্বরাই তার বিরুদ্ধে মামলা দিয়েছে : প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা খালেদা জিয়ার দুর্নীতির মামলা প্রসঙ্গে বলেন, আজকে যে মামলায় খালেদা জিয়ার শাস্তি হয়েছে, সে মামলা কে দিয়েছে? খালেদা জিয়ার প্রিয় ব্যক্তিত্ব।

‘সেনাবাহিনীর ৯ জেনারেলকে ডিঙিয়ে মইন উদ্দিনকে তিনি সেনাপ্রধান করেছিলেন। আর বিশ্বব্যাংকে চাকরি করতেন ফখরুদ্দীন, তাকে নিয়ে এসে বাংলাদেশ ব্যাংকের গর্ভনর করেছিলেন। তাদের দলীয় লোক ইয়াজউদ্দীনকে বানালেন রাষ্ট্রপতি। ফখরুদ্দীন, মইন উদ্দিন আর ইয়াজউদ্দীন তারাই তো তার বিরুদ্ধে মামলা দিলেন।এ মামলা তো আওয়ামী লীগ দেয়নি।

দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে আদালত রায় দিয়েছেন। এ রায়ের বিরুদ্ধে তার দলের আন্দোলনের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আদালত রায় দিয়েছেন। এখানে আমাদের তো করার কিছু নেই। আর আমরা যদি করতামই তা হলে ১০ বছর তো মামলা চলতে দিতাম না। ২০০৮-এ যখন ক্ষমতায় এলাম, তখনই তো করতে পারতাম। আমাদের বিচার বিভাগ স্বাধীন। এখানে আমাকে গালি দেয়া বা সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করার কী যুক্তি থাকতে পারে আমরা তো সেটি বুঝি না।

স্থানীয় সময় মঙ্গলবার রোমের প্রিনচিপি গ্র্যান্ড হোটেলে ইতালি আওয়ামী লীগ আয়োজিত এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।

অনুষ্ঠানে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, তার স্বামী বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও রাষ্ট্রপতি প্রয়াত জিয়াউর রহমান, দুই ছেলে তারেক রহমান এবং প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করেন শেখ হাসিনা।

ইতালি আওয়ামী লীগের সভাপতি ইদ্রিস ফারাজির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এএইচ মাহমুদ আলী প্রমুখ।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপির লোকেরা বলে- হ্যাঁ মাত্র এতটুকু টাকার জন্য এই শাস্তি দেয়ার কি দরকার ছিল? এতটুকু মানে দুই কোটি টাকার জন্য এই শাস্তি কেন দেয়া হল?

টাকাটা কোন এতিমের কাছে গেছে- এ প্রশ্ন করে তিনি বলেন, যদি খালেদা জিয়া বলতেন আমার দুই ছেলে এতিম, তার জন্য রেখেছি। তাও একটা যুক্তি ছিল। সেটিও উনি করেননি। নিজের কাছে কুক্ষিগত করতে গিয়ে ধরা খেয়েছে।

আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বলেন, আমার প্রশ্ন- আজকে যারা বিএনপি দরদি, আঁতেলরাও আছেন, তারা বলেন- দুই কোটি টাকার জন্য কেন এত মামলা। তা হলে আমার এখানে একটি প্রশ্ন আছে- দুর্নীতি করার জন্য কি একটি সিলিং থাকবে যে, এত কোটি পর্যন্ত দুর্নীতি করা জায়েজ। তারা কি সেটি বলতে চায়? বিএনপি তা হলে একটি দাবি করুক যে, এত কোটি পর্যন্ত তারা দুর্নীতি করতে পারবেন। সেটি নিয়ে একটি রিট করুক।

দুর্নীতি-সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে বিচার চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি এটুকু বলতে চাই- দুর্নীতি যারা করবে, সন্ত্রাস যারা করবে, জঙ্গিবাদের সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের বিচার হতেই হবে। কারণ বাংলাদেশটাকে একটা শান্তিপূর্ণ পরিবেশে আমরা আনতে চাই। বাংলাদেশের উন্নয়ন আমরা চাই। বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য উন্নত হোক সেটিই আমরা চাই। সেটি সম্ভব যখন দেশে দুর্নীতি, জঙ্গিবাদ, স্বজনপ্রীতি আমরা নিয়ন্ত্রণ করতে পারব।

তিনি বলেন, ২০১৪ ও ২০১৫ সালে নির্বাচন প্রতিরোধ এবং সরকার পতনের নামে এই বিএনপি জ্বালাও-পোড়াও ও অগ্নিসংযোগ শুরু করে। ২০১৩ সালে ঠিক একইভাবে তারা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড শুরু করে দেয়।

শেখ হাসিনা বলেন, এই সময়ে সমানে তারা আগুন দিয়ে মানুষ পুড়িয়েছে। প্রায় তিন হাজারের ওপরে মানুষকে তারা আগুন দিয়ে ঝলসে দিয়েছে। ওই তিন বছরে প্রায় পাঁচশর কাছাকাছি মানুষ মৃত্যুবরণ করেছে। পুলিশ, বিজিবি, সেনাসদস্যকে পুড়িয়ে মেরেছে। কত অন্যায় তারা করেছে চিন্তা করুন। সারা বাংলাদেশে এ ধরনের তাণ্ডব তারা করেছে।

শেখ হাসিনা তার শাসনামলে দেশের বিভিন্ন উন্নয়নের কথা তুলে ধরে বলেন, দুর্নীতি করতে আসিনি, বাংলাদেশের জনগণের ভাগ্য গড়তে এসেছি- নিজেদের ভাগ্য নয়।

এ সময় তার বিরুদ্ধে বিএনপি ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় বেশ কয়েকটি মামলা করা হলেও কোনো অভিযোগের প্রমাণ পাওয়া যায়নি বলে জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, প্রত্যেকটা মামলা তদন্ত হয়েছিল এবং সেই মামলায় কিছু পায়নি।