মনোনয়ন ফরম কিনলেন তাবিথ আউয়ালসহ ৫ জন

প্রকাশিত: ১১:৪৩ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ১৪, ২০১৮

মনোনয়ন ফরম কিনলেন তাবিথ আউয়ালসহ ৫ জন

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের (ডিএনসিসি) জন্য বিএনপির মনোনয়ন ফরম কিনলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল মিন্টুর ছেলে বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য তাবিথ আউয়াল ৫ জন । দলের সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী তুলে দেন।

রবিবার দুপুর আড়াইটায় নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে মনোনয়ন পত্র কেনেন তিনি। এর আগে রবিবার বেলা ১১টা থেকে মনোনয়ন ফরম বিক্রির শুরুতে বিএনপির সহ-প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক শাকিল ওয়াহেদ নয়াপল্টনে এসে মনোনয়ন ক্রয় করেন। এরপর বিএনপির মনোনয়ন ফরম কেনেন ঢাকা মহানগর (উত্তর) বিএনপির সভাপতি এম এ কাইয়ূম এবং বিএনপির সাবেক এমপি বহিস্কৃত নেতা মেজর (অব) আখতারুজ্জামান। দুপুর দেড়টার দিকে মনোনয়ন ফরম কেনেন দলটির বিশেষ সম্পাদক ড. আসাদুজ্জামান রিপন।

বিএনপির এই মনোনয়ন ফরম ১০ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আগামীকাল সোমবার (১৫ জানুয়ারি) বিকেল ৪টার মধ্যে ২৫ হাজার টাকা জামানতসহ মনোনয়ন ফরম জমা দিতে হবে। ঐ দিনই গুলশানে দলীয় চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে মনোনয়নপত্র যাচাই বাছাই শেষে প্রার্থী চূড়ান্ত করা হবে বলে জানিয়েছেন সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে মনোনয়ন পত্র ক্রয়ের পরে সাংবাদিকদের তাবিথ আউয়াল বলেন, ‘আমি আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে মনোনয়ন ফরম কিনেছি। আমি আশাবাদী বিএনপির মনোনয়ন আমি পাবো। কারণ এই নির্বাচনের প্রথম পর্ব আমাকে সমর্থন দিয়েছিল।

তিনি আরো বলেন, ‘নিয়ম অনুযায়ী আমি কালকে জমা দিবো। এরপর আমি গণমাধ্যমের সাথে কথা বলবো। তবে দল আমাকে মনোনয়ন না দিয়ে অন্য কাউকে দিলে তার হয়ে আমি এবং আমার সমর্থকরা কাজ করবো।’

বিএনপিতে স্পষ্টভাষী বলে পরিচিত মেজর আখতারুজ্জামান মনোনয়ন ক্রয়ের পরে বলেন, ‘ম্যাডামের পছন্দের তালিকায় নিশ্চয়ই আমি আছি। তিনি নিজে থেকে আমাকে মনোনয়নপত্র কিনতে বলেছেন।

মেজর আখতারুজ্জামান আরো বলেন, তাকে বিএনপি থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল ২০০১ সালের আগে। কিন্তু, ওইবছরই দল থেকে নির্বাচন করেছিলেন। আর এ ঘটনার মাধ্যমেই সে বহিষ্কারাদেশ উঠে গিয়েছিল।

মনোনয়ন নেওয়ার পর বিএনপির বিশেষ সম্পাদক ড. আসাদুজ্জামান রিপন সাংবাদিকদের বলেন, আমি ছাত্রজীবন থেকে সংগঠন করে এসেছি। সবসময় স্বৈরাচার আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে আমার অবস্থান। দলের দুঃসময়ে সামান্য অবদান রাখার চেষ্টা করেছি। আমার লেখাপড়া, সাংগঠনিক দক্ষতা এবং বিভিন্ন দেশের নগর উন্নয়ন সম্পর্কে অভিজ্ঞতাসহ সার্বিক দিক বিবেচনা করে দলীয় মনোনয়ন পাবো বলে আশা করি।

তিনি আরো বলেন, আমি অবিভক্ত ঢাকা মহানগরী থাকাকালীন সময় থেকে দলের চেয়ারপারসনের কাছে আগ্রহ প্রকাশ করি। আমি যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন শহর ও বিভিন্ন দেশে ভ্রমণ করেছি। ওখানকার নগর ব্যবস্থাপনা, পরিকল্পনা সম্পর্কে অভিজ্ঞতা অর্জন করেছি। সেখানকার মেয়রদের সঙ্গে কথা বলেছি। এসব দিক ভেবে আমি আমাদের নগর উন্নয়নে কাজ করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছি। আমার বিশ্বাস দলীয় মনোনয়ন পাবো।

মনোনয়পত্র কেনার পর বিএনপির সহ-প্রকাশনা সম্পাদক শাকিল ওয়াহেদ সাংবাদিকদের বলেন, আমার যোগ্যতা, দলের প্রতি আমার কমিটমেন্ট, আমি একটা খসড়া ইশতেহার সাবমিট করেছি, এসবের মান বিচার বিবেচনা করে আমার ধারণা আমাকে মনোনয়ন দেওয়ার সম্ভাবনা বেশি।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি একটা স্বপ্ন দেখানোর চেষ্টা করছি। আসুন গড়ি বিশ্ব মানের একটা নগর। বিশ্বমানের শহর বলতে আমরা যেগুলো বুঝি প্যারিস, নিউইয়র্ক, লস এঞ্জেলস, সিঙ্গাপুর, সাংহাই এসব।

প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালের ২৮ এপ্রিল ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে ভোট হয়। আওয়ামী লীগের সমর্থনে ওই নির্বাচনে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র নির্বাচিত হন সদ্য প্রয়াত আনিসুল হক। চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতবছরের ৩০ নভেম্বর তার মৃত্যুতে স্থানীয় সরকার বিভাগ ১ ডিসেম্বর থেকে ওই পদটি শূন্য ঘোষণা করে।

এরপর গত ৯ জানুয়ারি ডিএনসিসি’র মেয়র পদে উপ-নির্বাচন, সম্প্রসারিত ১৮টি ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর ও ৬টি সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর এবং ডিএসসিসি’র সম্প্রসারিত ১৮টি ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর ও ৬টি সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে নির্বাচনের জন্য তফসিল ঘোষণা করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা।

তফসিল অনুযায়ী, এই নির্বাচনে প্রার্থী হতে মনোনয়নপত্র কেনা ও জমা দেওয়া যাবে আগামী ১৮ জানুয়ারি পর্যন্ত। আবেদনকারী প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র বাছাই হবে ২১ ও ২২ জানুয়ারি। তা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ২৯ জানুয়ারি।

নির্বাচনী আচরণবিধি অনুযায়ী, প্রতীক বরাদ্দের আগে কোনো প্রচার চালানো যায় না। সে অনুযায়ী ৩০ জানুয়ারি থেকে প্রার্থীরা প্রচারণা শুরু করতে পারবেন।