‘বিডিআর বিদ্রোহের পুনরাবৃত্তি দেখতে চায় না সরকার’

প্রকাশিত: ১০:১০ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ২০, ২০১৭

‘বিডিআর বিদ্রোহের পুনরাবৃত্তি দেখতে চায় না সরকার’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তার সরকার কখনোই একটি শৃঙ্খল বাহিনীর কাছ থেকে পিলখানা হত্যাকাণ্ডের মতো মর্মান্তিক ঘটনার পুনরাবৃত্তি দেখতে চায় না।

বুধবার সকালে রাজধানীর পিলখানায় বিজিবি সদর দপ্তরে ‘বিজিবি দিবস-২০১৭’ উপলক্ষে আয়োজিত কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে দেওয়া ভাষণে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, বিজিবির সদস্য হিসেবে আপনাদের পারস্পরিক আস্থা ও শ্রদ্ধাবোধ, শৃঙ্খলাবোধ, মানবিকতা এবং সর্বোপরি পারস্পরিক সহানুভূতিশীলতাই এই বাহিনীর বন্ধন দৃঢ়তর করবে। কাজেই ভবিষ্যতে সবাই বাহিনীর নিজস্ব শৃঙ্খলার বিষয়টি ভালোভাবে জেনে নেবে, চর্চা করবে এবং দেশের কল্যাণে নিজেদের নিয়োজিত করবে।

তিনি বলেন, বিজিবির সদস্য হিসেবে আপনাদের আনুগত্য ও বিশ্বস্ততা প্রশ্নাতীত। সীমান্ত রক্ষা, অভ্যন্তরীণ আইনশৃঙ্খলা রক্ষা এবং প্রাকৃতিক কিংবা সামাজিক যেকোনো দুর্যোগে বিজিবি জাতির আস্থার ঠিকানা।

বিজিবির উন্নয়নে সরকারের সব রকম সহযোগিতা অব্যাহত রাখার আশ্বাস দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মুক্তিযুদ্ধে আত্মত্যাগ বিবেচনায় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ একটি গৌরবোজ্জ্বল প্রতিষ্ঠান।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই বাহিনী ২২২ বছরের ঐতিহ্যমণ্ডিত। ১৭৯৫ সালে রামগড় লোকাল ব্যাটালিয়ন নামে প্রথম গড়ে তোলা হয় এই বাহিনী। সময়ের ব্যবধান ও ভৌগোলিক পরিবর্তনের কারণে নানান নামে দায়িত্ব পালনের পর এখন বিজিবি নামে সীমান্তরক্ষী বাহিনী হিসাবে কাজ করছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি আমরা সরকার গঠনের এক মাস ১৯ দিনের মাথায়, ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি বিডিআরে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে। যা দ্রুত সমাধান করে আমরা নতুন আইন করি। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ পুনর্গঠন করি। তৎকালীন বিডিআরের ট্রাজিক ঘটনায় শহীদ ৫৭ জন চৌকস সেনা কর্মকর্তাসহ সব শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান তিনি।

গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্বে ও পরবর্তী সময়ে রাজনৈতিক সহিংসতা, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড প্রতিরোধ, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ এবং জনসাধারণের জান-মাল রক্ষায় বিজিবির সদস্যদের দায়িত্বশীল ভূমিকার প্রশংসা করেন প্রধানমন্ত্রী।

এর আগে সকালে প্রধানমন্ত্রীকে বিজিবি সদর দপ্তরে স্বাগত জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব মো. মোস্তফা কামাল এবং বিজিবির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবুল হোসেন। এরপর তাকে রাষ্ট্রীয় সালাম জানানো হয়।

প্রধানমন্ত্রী বিজিবি সদর দপ্তরের বীরউত্তম আনোয়ার হোসেন প্যারেড গ্রাউন্ডে বিজিবি দিবস উপলক্ষে আয়োজিত মনোজ্ঞ কুচকাওয়াজ পরিদর্শন করেন এবং সালাম গ্রহণ করেন। এ সময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন প্যারেড কমান্ডার এবং বিজিবির উপমহাপরিচালক মো. জুলফিকার আলী।

অনুষ্ঠানে ৫১ জন বিজিবি সদস্যের মাঝে বীরত্বপূর্ণ এবং কতিত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে বিজিবি পদক তুলে দেন শেখ হাসিনা।