‘প্রধানমন্ত্রীকে দেয়া উকিল নোটিশ প্রত্যাহার না করলে আইনি ব্যবস্থা’

প্রকাশিত: ৯:৫২ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ২০, ২০১৭

‘প্রধানমন্ত্রীকে দেয়া উকিল নোটিশ প্রত্যাহার না করলে আইনি ব্যবস্থা’

আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীকে দেওয়া উকিল নোটিশ প্রত্যাহার করা না হলে তার আইনজীবীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তিনি বলেন, খালেদা জিয়া ও তার পরিবারের দুর্নীতি দেশ-বিদেশে প্রমাণিত। আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত।

বুধবার বেগম জিয়ার উকিল নোটিশের জবাবে আওয়ামী লীগের সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানানো হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী।

হাছান মাহমুদ বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া যে আইনি নোটিশ পাঠিয়েছেন সেটি লোক দেখানো। নিজের এবং সন্তানদের দুর্নীতি আড়াল করতেই তিনি এ কাজ করেছেন। তিনি জানেন তার দুর্নীতি মামলার রায় যে কোনও দিন হয়ে যেতে পারে। তাই তার মাথা খারাপ হয়ে গেছে। তিনি (বেগম জিয়া) তার এই নোটিশ প্রত্যাহার না করলে এর ফয়সালা আইনি প্রক্রিয়ায় আদালতে করা হবে। এক্ষেত্রে তিনিই হারবেন।

তিনি বলেন, ১২টি দেশে খালেদা জিয়া ও তার পরিবারের এক হাজার দুইশ কোটি মার্কিন ডলার পাচারের অভিযোগ এসেছে। খালেদা জিয়া জরিমানা দিয়ে কালো টাকা সাদা করেছেন। এ থেকে প্রমাণ হয় তিনি স্বীকার করে নিয়েছেন তিনি ও তার পরিবার দুর্নীতিবাজ। এখন খালেদা জিয়া শাক দিয়ে মাছ ডাকতে চাইছেন। যদি তিনি ক্ষমা চেয়ে নোটিশ প্রত্যাহার না করেন তাহলে আমরা আইনের মাধ্যমে বিষয়টির মোকাবিলা করব। সেই সাথে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধেও আইনি ব্যবস্থা নেব।

এ সময় দুর্নীতি ও অর্থপাচারের জন্য খালেদা জিয়াকে জনগণের ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানান হাছান মাহমুদ।

সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী বলেন, খালেদা জিয়া এতিমদের টাকা পর্যন্ত আত্মসাৎ করেছিলেন। এ কারণে বুধবার তিনি আদালত চত্বরে ঘুরপাক খাচ্ছেন। এই মামলা তো আর শেখ হাসিনা বা তার সরকার দেয়নি, দিয়েছে খালেদা জিয়ার পছন্দের সরকার।

তিনি বলেন, খালেদা জিয়া যেসব দুর্নীতি করেছে সব প্রমাণ আছে। আওয়ামী লীগ কোনও দিন ভিত্তিহীন কথা বলে না। এখন তাকে (খালেদা জিয়া) ক্ষমা চেয়ে নোটিশ প্রত্যাহার করতে হবে। অন্যথায় আমরাও আইনগত ব্যবস্থা নেব।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক আবদুস সোবাহান গোলাপ ও কার্যনিবর্বাহী সদস্য রিয়াজুল কবির কাওছার প্রমুখ।

উল্লেখ্য, সৌদি আরবে জিয়া পরিবারের সম্পদ নিয়ে দেওয়া বক্তব্যের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উকিল নোটিশ পাঠিয়েছেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।

মঙ্গলবার এই নোটিশ পাঠানো হয় বলে জানিয়েছেন বিএনপির চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ের গণমাধ্যম শাখার কর্মকর্তা শায়রুল কবীর খান।

এ ছাড়া বুধবার সকালে রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনেও এই তথ্য জানান বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তিনি জানান, এই উকিল নোটিশের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীকে তার বক্তব্য প্রত্যাহারের করতে বলা হয়েছে।

এর আগে ৭ ডিসেম্বর গণভবনে কম্বোডিয়া সফরের ওপর সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কয়েকটি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে জানান, সৌদি আরবে জিয়া পরিবারের বিপুল সম্পদ রয়েছে। তবে এ নিয়ে দেশের বেশিরভাগ সংবাদ মাধ্যম খবর প্রকাশ না করায় তা নিয়ে অসন্তোষও প্রকাশ করেন তিনি। সাংবাদিকরা বিনা পয়সায় শপিংয়ের সুযোগ পেয়ে এই খবর চেপে গেছেন কি না তাও জানতে চান প্রধানমন্ত্রী।

শেখ হাসিনা ভয় পান না : আ,লীগ
ঢাকা: বিএনপি চেয়ারপাসন বেগম খালেদা জিয়া ও তার পরিবারকে নিয়ে দেয়া বক্তব্যে মানহানির অভিযোগ এনে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উকিল নোটিশ পাঠিয়েছে বিএনপি। উকিল নোটিশের প্রতিক্রিয়ায় আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন, শেখ হাসিনা এগুলো ভয় পান না। এ উকিল নোটিশ চিহ্নিত দুর্নীতিবাজদের রাজনৈতিক স্ট্যান্ডবাজি। আইন তার নিজের গতিতে চলবে।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফরুল্লাহ বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা উকিল নোটিশ, জেল এগুলো ভয় পান না। যেটা সঠিক, যেটা বাস্তব সে কথায় তিনি বলেছেন। যদি উনি (খালেদা জিয়া) উকিল নোটিশ দিয়ে থাকেন, তাহলে আইন তার নিজের গতিতে চলবে। সেটা আদালতে প্রমাণ হবে।

উকিল নোটিশের প্রতিক্রিয়ায় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান বলেন, এতেও খালেদা জিয়ার শেষ রক্ষা হবে না।

আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, তাদের বিরুদ্ধে এফবিআই সাক্ষী দিয়েছে, বিদেশ থেকে টাকা আনা হয়েছে, আদালতের মাধ্যমে দণ্ডিত আসামি। খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে টাকা আত্মৎসাতের মামলা চলছে। এরপরও কি তাদেরকে আমরা বলবো, উনারা ভালো মানুষ? এরপরও যদি বলা হয় তারা দুর্নীতিবাজ না, তাহলে দেশে দুর্নীতিবাজ ছাড়া কোনো মানুষই পাওয়া যাবে না। তারা চিহ্নিত দুর্নীতিবাজ, এগুলো তাদের রাজনৈতিক স্ট্যান্ডবাজি। প্রমাণিত দুর্নীতিবাজ।