দেশে আর প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচন দেখতে চাই না : নির্বাচন কমিশনার

প্রকাশিত: ১:৪৪ পূর্বাহ্ণ, ডিসেম্বর ১৮, ২০১৭

দেশে আর প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচন দেখতে চাই না : নির্বাচন কমিশনার

নির্বাচন কমিশনার বেগম কবিতা খানম বলেছেন, বাংলাদেশে আর প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচন দেখতে চাই না। শুধুমাত্র আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দ্বারা আইন প্রয়োগ করা যায় না। এ ব্যাপারে প্রার্থী-ভোটার সবার দায়িত্ব রয়েছে।

তিনি বলেন, নির্বাচনে যারা আইনশৃঙ্খলা ভঙ্গ করবে তাদেরকে জবাবদিহিতার ব্যবস্থা করা হবে।

রবিবার বিকেলে বোদা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে পঞ্চগড়ের বোদা পৌরসভার সাধারণ নির্বাচন উপলক্ষে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের উপ সচিব (আইন) মতিয়ার রহমান, জেলা প্রশাসক অমল কৃষ্ণ মন্ডল, জেলা পুলিশ সুপার গিয়াস উদ্দিন আহমদ, জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম।

প্রার্থীদের এক প্রশ্নের জবাবে নির্বাচন কমিশনার বেগম কবিতা খানম বলেন, কালো টাকা ও পেশি শক্তির অপব্যবহারের অভিযোগ পেলে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

তিনি বলেন, ১৭ বছর পর অনুষ্ঠিত এ নির্বাচনকে আপনারা উৎসব হিসেবে গ্রহণ করেন।

এ সময় প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন নির্বাচন কমিশনার বেগম কবিতা খানম। পরে তিনি সুষ্ঠুভাবে বোদা পৌরসভার প্রথম নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।

অনুষ্ঠানে নির্বাচন সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় নিয়ে নৌকা প্রতীকের মেয়র প্রার্থী ওয়াহিদুজ্জামান সুজা, ধানের শীষ প্রতীকের মেয়র প্রার্থী হকিকুল ইসলাম, স্বতন্ত্র প্রার্থী আকতার হোসেন হাসান, কাউন্সিলর প্রার্থী আফসার হোসেন, শাহজাহান আলম, আবুল কালাম আজাদ কথা বলেন।

রসিক নির্বাচন সুষ্ঠু হবে: নির্বাচন কমিশনার
নারায়ণগঞ্জ: রংপুর সিটি করপোরেশন (রসিক) নির্বাচন সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে. এম. নুরুল হুদা।

রবিবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জ ক্লাব মিলনায়তনে স্মার্টকার্ড বিতরণ অনুষ্ঠান উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন সিইসি কে. এম. নুরুল হুদা।

সিইসি কে. এম. নুরুল হুদা বলেন, ‘আমরা প্রস্তুত। রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন প্রতিযোগিতামূলক, স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ হবে, গণতান্ত্রিক হবে।

সিইসি আরো বলেন, দুটি সিটি করপোরেশন নির্বাচন, ৪০৭টি স্থানীয় পর্যায়ে এবং দুটি জাতীয় পর্যায়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সব নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে। সে নির্বাচন নিয়ে কোনো সন্দেহ বা প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়নি। তাই রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন প্রতিযোগিতামূলক, স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ হবে।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার আরো বলেন, বাংলাদেশে নয় কোটির বেশি মানুষ স্মার্টকার্ড পাবেন। ২০১৮ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে সবার হাতে এই কার্ড পৌঁছে দেওয়া হবে।

আর নারায়ণগঞ্জে নয় লাখ ৩২ হাজার ৯১২ জনকে স্মার্টকার্ড দেওয়া বলে জানান জানান কে. এম. নুরুল হুদা। তিনি জানান, স্মার্টকার্ডের মাধ্যমে নাগরিকরা ২৬ থেকে ২৭টি রাষ্ট্রীয় সেবা পাবেন।

নারায়ণগঞ্জ ক্লাব মিলনায়তনে স্মার্টকার্ড বিতরণ অনুষ্ঠানে নারায়ণগঞ্জে প্রথম স্মার্টকার্ড গ্রহণ করেন সাবেক সচিব আকরাম আলী মৃধা। এরপর জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যাপক শিরিন আক্তার, নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি মাহবুবুর রহমান মাসুম স্মার্টকার্ড গ্রহণ করেন।

ঢাকা অঞ্চলের আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা রকিব উদ্দিন মণ্ডলের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ, জেলা প্রশাসক রাব্বী মিয়া, পুলিশ সুপার মঈনুল হক, র‍্যাব-১১-এর অধিনায়ক লে. কর্নেল কামরুল হাসান ও জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম প্রমুখ।

ইভিএম ব্যবহারে প্রস্তুত নয় ইসি, সময়মতো সেনা মোতায়েনের সিদ্ধান্ত: সিইসি
আগামী জাতীয় নির্বাচনে ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহারের জন্য নির্বাচন কমিশন প্রস্তুত নয়। বিভিন্ন স্থানীয় সরকার নির্বাচনে পরীক্ষামূলকভাবে ইভিএম ব্যবহার করা হবে। তবে সময়মতো সেনা মোতায়েনের বিষয়ে ইসি সিদ্ধান্ত নেবে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) খান মো. নূরুল হুদা।

বুধবার আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন ভবনে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

আগামী জাতীয় নির্বাচনে সেনা মোতায়েন হবে কিনা জানতে চাইলে সিইসি বলেন, ‘এখনো সিদ্ধান্ত নিইনি। প্রত্যেক জাতীয় নির্বাচনেই সেনাবাহিনী মোতায়েন থাকে—এটা একটা বাস্তবতা। কিন্তু আমরা কমিশন এখন পর্যন্ত সিদ্ধান্ত নিইনি। অনেক সময় আছে। এত তাড়াতাড়ি আপনারা এই সিদ্ধান্ত চান কেন? অনেক সময় আছে। এখনো এক বছরের বেশি সময় আছে সেই অবস্থানে পৌঁছাতে। এত আগে তো সেই সিদ্ধান্ত দেওয়া যাবে না। সময়মতো সেনা মোতায়েনের বিষয়ে ইসি সিদ্ধান্ত নেবে।’

প্রসঙ্গত, গত সোমবার নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার সাংবাদিকদের বলেন, আগামী নির্বাচনে সেনা মোতায়েন হবে। তবে কোন প্রক্রিয়ায় হবে, তা এখনো ঠিক হয়নি।

পরদিন মঙ্গলবার সিইসি সরকারি বার্তা সংস্থা বাসসকে বলেন, নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েনের সিদ্ধান্ত হয়নি। নির্বাচন কমিশনারদের এ ধরনের বক্তব্যে তাদের মধ্যে বিভক্তি ফুটে উঠছে কি না— সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে নূরুল হুদা বলেন, ‘বিভক্তির কারণ নেই। আপনারা (সাংবাদিক) নাছোড়বান্দা লোক। শুনতে চান, উনি (মাহবুব তালুকদার) হয়তো বলেছেন। উনি (মাহবুব) কিন্তু বলেছেন, এটা কমিশনের সিদ্ধান্ত না।’

নূরুল হুদা বলেন, মাহবুব তালুকদার মনে করেন, নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েন করার প্রয়োজন হবে, এটা তার ব্যক্তিগত মত। কমিশনের সভার বরাত দিয়ে তিনি এ কথা বলেননি।

নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ সেনা মোতায়েন প্রসঙ্গে বলেন, ‘নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর পরিস্থিতি বিবেচনা করে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। নির্বাচনের এখনো এক বছর বাকি। কমিশন এ ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি।’

সেনাবাহিনীকে আইন-শৃংখলাবাহিনীর সংজ্ঞায় অন্তর্ভুক্ত করা প্রসঙ্গে সচিব বলেন, ‘সেনাবাহিনীকে আইন-শৃংখলা বাহিনীর সংজ্ঞায় অন্তর্ভুক্ত করতে হলে- গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও), সংবিধান ও সিআরপিসি সংশোধন করতে হবে। সেনাবাহিনী হচ্ছে দেশ রক্ষা বাহিনী, এরা আইন-শৃংখলা বাহিনী না।’

তিনি বলেন, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর পরিস্থিতি বিবেচনায় কমিশন সিদ্ধান্ত নেবে স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে সেনা মোতায়েন হবে নাকি অন্য কোনো পদ্ধতিতে হবে।

নির্বাচনে সেনাবাহিনীকে বিচারিক ক্ষমতা দিয়ে মোতায়েন বিষয়ে বিএনপির দাবি প্রসঙ্গে জানতে চাইলে হেলালুদ্দীন আহমদ বলেন, ইতোপূর্বে দেশে যতগুলো সাধারণ নির্বাচন হয়েছে, প্রত্যেকটিতে স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। এ পর্যন্ত কোনো নির্বাচনেই বিচারিক ক্ষমতা দিয়ে সেনা মোতায়েন হয়নি।