খালেদা-জামায়াতকে ক্ষমতার বাইরে রাখতে হবে : তথ্যমন্ত্রী

প্রকাশিত: ১:২৪ পূর্বাহ্ণ, নভেম্বর ২৩, ২০১৭

খালেদা-জামায়াতকে ক্ষমতার বাইরে রাখতে হবে : তথ্যমন্ত্রী

ময়মনসিংহ : তথ্যমন্ত্রী ও জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু জঙ্গিদের সঙ্গী বেগম খালেদা-জামায়াত চক্রকে আগামীতেও ক্ষমতার বাইরে রাখার আহবান জানিয়ে বলেছেন, তারা আবার ক্ষমতায় এলে দেশে জঙ্গি উৎপাদন শুরু করবে, রাজাকারদের পুনর্বাসন করে দেশে লুটপাটের রাজত্ব কায়েম করবে। খবর বাসসের

তিনি বলেন, ‘খালেদা -জঙ্গি রাজাকার চক্রকে ক্ষমতার বাইরে রাখলেই কেবল নির্বাচন অনুষ্ঠান নিয়ে বিতর্কের অবসান, রাজাকারের সরকারের পুনরাবৃত্তি রোধ, সরকার বদলের সাথে ইতিহাসের পাতা বদলের সমাপ্তি আর জঙ্গি উৎপাদন বন্ধ হবে।

দেশ দ্রুত উন্নতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে তিনি সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে শেখ হাসিনাকে আবারো সমর্থন দিয়ে উন্নয়নের ধারাকে অব্যাহত রাখতে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের সকল শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ ভাবে কাজ করার আহবান জানান।

হাসানুল হক ইনু আজ উপজেলা জাসদ আয়োজিত ফুলবাড়ীয়া ডিগ্রী কলেজ মাঠে অনুষ্ঠিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

উপজেলা জাসদ সভাপতি মো. আব্দুর রহমান সরকারের সভাপতিত্বে জনসভায় প্রধান বক্তা ছিলেন ময়মনসিংহ মহানগর জাসদ সভাপতি ও জাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সম্পাদক সৈয়দ শফিকুল ইসলাম মিন্টু।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, শেখ হাসিনা প্রতিহিংসার রাজনীতি করেন না। খালেদা জিয়া প্রতিহিংসার রাজনীতি করেন। তার প্রমাণ আগুন দিয়ে মানুষ মারা, জঙ্গিদের সহায়তা করা।

এ ছাড়াও খালেদা জিয়া স্বাধীনতার মূল চারনীতি এবং বঙ্গবন্ধুকে জাতির পিতা মানেন না জানিয়ে তিনি আরো বলেন, এসব কর্মকান্ডের জন্য জনগণ তাদেরকে আগামী নির্বাচনেও প্রত্যাখান করবে।

এর আগে তথ্যমন্ত্রী বেলা সাড়ে ১১ টায় ময়মনসিংহ সার্কিট হাউজে বিটিভি’র ময়মনসিংহ উপকেন্দ্র ও জেলা তথ্য অফিসের কর্মকর্তাগনের সঙ্গে এবং বিকেলে ফুলবাড়িয়া উপজেলা পরিষদের সকল বিভাগের কর্মকর্তাগণের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। ফেরার পথে ফুলবাড়িয়ায় শাহ আলমিয়া এতিমখানা পরিদর্শন করেন।

নজরুলের অসাম্প্রদায়িক চেতনা বর্তমান নব্য সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধেও এক চিরসজীব প্রতিবাদ: ইনু

তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেছেন, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের অসাম্প্রদায়িক চেতনা বর্তমান নব্য সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধেও এক চিরসজীব প্রতিবাদ।

তিনি বলেন, একবিংশ শতকেও যাঁর প্রাসঙ্গিকতা কেবল ইতিহাস পাঠই নয়, বর্তমান সাংস্কৃতিক সংকট অতিক্রমণের কাক্সিক্ষত পথের নির্দেশকও।

আজ সকালে উত্তরা ক্লাবের লোটাস লাউঞ্জে ‘একুশ শতকে নজরুল’ শীর্ষক দু’দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন।

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা ভাষা ও সাহিত্য বিভাগ এবং ভারতের আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের সহযোগিতায় উত্তরা ইউনিভার্সিটি এ আন্তর্জাতিক সম্মেলনের আয়োজন করেছে।

সম্মেলনে বিশেষ অতিথি ছিলেন এমেরিটাস অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান, বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক শামসুজ্জামান খান, নজরুল গবেষক ও এমেরিটাস অধ্যাপক ড. রফিকুল ইসলাম, রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের এমেরিটাস অধ্যাপক ড. বরুণকুমার চক্রবর্তী, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. খন্দকার মোঃ নাসিরউদ্দিন, ভারতের আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. বেলা দাস, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. মোঃ মাহবুব হোসেন ও কবি পৌত্রী খিলখিল কাজী।

উত্তরা ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম. আজিজুর রহমানের সভাপতিত্বে আন্তর্জাতিক এ সম্মেলনে ‘একুশ শতকে নজরুল’ শীর্ষক মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. সৌমিত্র শেখর।

গবেষণা ও শিক্ষামূলক আন্তর্জাতিক মানের এ সম্মেলন আয়োজনের জন্য তথ্যমন্ত্রী আয়োজকদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, বাংলাদেশের জাতীয় কবি তথা অখ- বাংলার কিংবদন্তি সাহিত্যিক কাজী নজরুল সাহিত্য, সঙ্গীত এবং ব্যক্তি জীবনের কর্মমুখরতায় এ ভূখ-কে ঋদ্ধ করেছেন।

তিনি বলেন, তাঁর গান, কবিতা, গল্প, উপন্যাসে শিল্প মাধুর্য যেমন প্রকাশিত তেমনি তাতে অসাম্প্রদায়িক চেতনাও জাগ্রত।
ইনু বলেন, জাতীয় কবির প্রতিভার সর্বাপেক্ষা গৌরবের দিকটি হলো, তাঁর ব্যক্তি ও সমষ্টির নির্বিরোধ মিলন।

বিদ্রোহী কবি হিসেবে বাংলার সাহিত্যে তাঁর স্থান অমর হয়ে থাকবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ সম্মেলনে বিভিন্ন প্রাবন্ধিকের প্রবন্ধের মাধ্যমে নজরুলকে নতুনভাবে জানা যাবে এবং বিদ্রোহী কবিকে নিয়ে গবেষণার নতুন নতুন ক্ষেত্র সৃষ্টি হবে।

সম্মেলনের আরো বক্তৃতা করেন বাংলাদেশের রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. বিশ্বজিৎ ঘোষ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. সফিকুন্নবী সামাদী, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. খালেদ হোসাইন, ভারতের পশ্চিমবঙ্গের সাংবাদিক ও কবি জিয়াদ আলী, বিশ্বভারতীর অধ্যাপক অতনু শাশমল, আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. বিশ্বতোষ চৌধুরী, রাঁচি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. সুব্রত কুমার পাল প্রমুখ।

আগামীকাল ২২ নভেম্বর আন্তর্জাতিক এ সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনের সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ.টি ইমাম প্রধান অতিথি থাকবেন।