এই সরকারকে বিদায় করতে না পারলে আমরা সবাই ব্যর্থ হবো : মির্জা ফখরুল

প্রকাশিত: ১:২১ পূর্বাহ্ণ, নভেম্বর ২৩, ২০১৭

এই সরকারকে বিদায় করতে না পারলে আমরা সবাই ব্যর্থ হবো : মির্জা ফখরুল

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এই সরকারকে বিদায় করতে না পারলে আমরা সবাই ব্যর্থ হবো, সেই সঙ্গে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত হবে বাংলাদেশ। ফলে আমরা সেটা হতে দিতে পারি না।

বুধবার বিকেলে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে তারেক রহমানের ৫৩ তম জন্মদিন উপলক্ষে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল কেন্দ্রীয় কমিটি আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল আরো বলেন, ‘যদি জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত হয় এবং খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী হন তাহলেই তারেক রহমান দেশে আসতে পারবেন। অন্যথায় নয়।’

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর  বলেন, ‘এই সরকারের পতন স্বাভাবিকভাবে করতে পারবো বলে মনে হয় না। হাতিয়ার লাগবে। আমাদেরকে রুখে দাঁড়াতে হবে’

ছাত্রদল সভাপতি রাজীব আহসানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন সাবেক ছাত্র নেতা শামসুজ্জামান দুদু, আমান উল্লাহ আমান, খায়রুল কবির খোকন, ফজলুল হক মিলন, আজিজুল বারী হেলাল, শহীদ উদ্দীন চৌধুরী, কামরুজ্জামান রতন, সুলতান সালাহ উদ্দীন টুকু, আমিরুল ইসলাম আলীম, আব্দুল কাদির ভুইয়া জুয়েল, ছাত্রদলের সিনিয়র সহ সভাপতি মামুনুর রশীদ, সহ সভাপতি এজমল হোসেন পাইলট, নাজমুল হাসান প্রমুখ।

সভা সঞ্চলনা করেন ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ।

এর আগে দলীয় নেতাকর্মীদের উপর সরকারের দমন-পীড়নের কথা বলতে গিয়ে আবারো কাঁদলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

মঙ্গলবার দুপুরে ঠাকুরগাঁও জেলা পরিষদ মিলনায়তনে জেলা জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেয়ার একপর্যায়ে এ ঘটনা ঘটে।

এর আগেও গত ৮ জুলাই ঠাকুরগাঁও সদরের রায়পুর ইউনিয়নে এক সভায়ও সরকারের বিরুদ্ধে একই অভিযোগ তুলে তিনি কেঁদেছিলেন।

ফখরুল বলেন, ‘আজকে আমরা একটা দুঃসময়ের মধ্যে যাচ্ছি। আমার সংগঠনের যারা মহিলা-ছাত্রীরা আছে তারা মাফ পায়নি। পুলিশ তাদেরকে মেরে পা ভেঙে দিয়েছে, কোমড় ভেঙে দিয়েছে। আমাদের সারা বাংলাদেশে হাজার হাজার নেতাকর্মীকে গুম করে ফেলেছে; তাদেরকে এখনো পাওয়া যায়নি। তাদের সন্তানেরা এখনো বাবার পথ চেয়ে বসে থাকে। এই একটা দুঃসময়। গ্রেপ্তার, গুম চলছেই।’

বক্তব্য দেওয়ার এক পর্যায়ে তিনি কেঁদে ফেলেন। এ সময় সভায় এক আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়।

পরে নিজেকে সামলে নিয়ে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘এমন একটা দুঃসময়, গ্রেপ্তার খুন চলছেই। এই সরকার, যারা আমাদের গণতন্ত্রের সব স্তম্ভকে ধ্বংস করে দিয়েছে, মানুষের অধিকারগুলোকে কেড়ে নিয়েছে। ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছে। আমাদের বেঁচে থাকার মৌলিক অধিকারগুলোও কেড়ে নিয়েছে।’

মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের মা-বোনদের কোনো নিরাপত্তা নেই। মানুষেরও নিরাপত্তা নেই। খবরের কাগজ খুললেই দেখবেন নারীদের লাঞ্ছনা করা হচ্ছে, নির্যাতন করা হচ্ছে। খবরের কাগজ খুললেই দেখবেন আমার ভাইকে গুলি করে মেরে ফেলা রাখা হয়েছে। গুম হয়ে গেছে। গত কয়েক বছরে হাজারো মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। পাঁচ শতাধিক মানুষকে গুম করে ফেলা হয়েছে।’

এর আগে দুপুর ১২টার দিকে ঠাকুরগাঁওয়ের জেলা পরিষদ মিলনায়তনে জাতীয় সংগীতের তালে তালে জাতীয় পতাকা ও দলীয় সংগীতের তালে তালে সাংগঠনিক পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে সম্মেলনের প্রথম অধিবেশন শুরু হয়। সম্মেলন উদ্বোধন করেন জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের কেন্দ্রীয় সভানেত্রী আফরোজা আব্বাস।

আলোচনায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন মহিলা দলের কেন্দ্রীয় সভাপতি আফরোজা আব্বাস, সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ, সহসভাপতি জিবা খান, সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদিকা হেলেন জেরিন খান, রংপুর বিভাগীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আসাদুল হাবিব দুলু, জেলা বিএনপি সভাপতি তৈমুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফয়সল আমীন প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ঠাকুরগাঁও জেলা মহিলা দলের আহ্বায়িকা ফোরাতুন নাহার প্যারিস।