১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১১:৩৮ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ৪, ২০১৭
বিপিএলের উদ্বোধনী দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে রাজশাহী কিংসকে হারিয়ে জয় পেয়েছে মাশরাফির দল রংপুর রাইডার্স। মাশরাফির দল রংপুর রাইডার্স ১৫৫ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ৬ উইকেট এবং ৮ বল হাতে থাকতেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায়।
বড় লক্ষ্য তাড়া করতে গিয়ে ব্যাটিং বিপর্যয়ের মুখে রংপুর রাইডার্স! সেখান থেকে রংপুর যেভাবে ঘুরে দাঁড়ায়, তাতে বড় অবদান মোহাম্মদ মিথুন আর শাহরিয়ার নাফীসের। তাদের ৫৬ বলে ৭৫ রানের জুটিতেই খাদের কিনারা থেকে ওঠে জয়ের আকাশে ডানা মেলে রংপুর রাইডার্স।
নাফীস-মিথুনের জুটি ভাঙে দলীয় ৯০ রানে। উইলিয়ামসের বলে লুক রাইটের এক হাতের অসাধারণ এক ক্যাচে পরিণত হওয়ার আগে মিথুনের ব্যাট থেকে আসে ৪৬ রান। ৩৩ বলে তিন চার আর এক ছয়ে এ রান আসে তার ব্যাট থেকে।
তাদের জুটি ভাঙার পর উইকেটে এসে উড়িয়ে মারতে থাকেন রবি বোপারা। স্যামিট প্যাটেল আর ফরহাদ রেজার বলে দুই ছয় মেরে বাড়তে থাকা রিকোয়ার্ড রান রেটকে নাগালের মধ্যে নিয়ে আসেন বোপারা। দলের ১১৩ রানে জেমস ফ্র্যাঙ্কলিনের নিচু হওয়া একটি বলে বোল্ড হন নাফীস। ৩৪ বলে তিন চার আর এক ছয়ে ফেরার আগে ৩৫ রান আসে তার ব্যাট থেকে।
দলকে জয়ের সীমানায় নিয়ে যেতে বাকি কাজটুকু সেরেছেন বোপারা আর থিসেরা পেরেরা। পঞ্চম উইকেটে এ দুজনের ৪২ রানের জুটিতেই ম্যাচ থেকে ছিটকে যায় রাজশাহী কিংস। অবশ্য রাজশাহী কিংসের ফিল্ডারদের বদান্যতাও কম ছিল না। রবি বোপারার ক্যাচ ছাড়েন লুক রাইট, পেরেরার স্যামিট প্যাটেল। ২৩ বলে ৩৯ রানে বোপারা এবং ১২ বলে ২০ রানে অপরাজিত থাকেন পেরেরা।
এর আগে রাজশাহী কিংসের অধিনায়ক ড্যারেন স্যামির দল নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ১৫৪ রান করে। এই ম্যাচে প্রথমে রাজশাহী কিংসের বিপক্ষে টস জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় রংপুর রাইডার্স।
সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সন্ধ্যা সাতটায় শুরু হওয়া ম্যাচে রাজশাহীর ওপেনার লুক রাইট ১৪ বলে ১১ রান করে বিদায় নেন। তার আগেই বিদায় নেন আরেক ওপেনার মুমিনুল হক (৯)। তিন নম্বরে নামা রনি তালুকদার খেলেন ৪৭ রানের দারুণ এক ইনিংস। মাশরাফির বলে বোল্ড হওয়ার আগে তিনি ৩৮ বলে তিনটি চার আর দুটি ছক্কা হাঁকান।
শুরুটা ভালো হয়নি মুশফিকের। ৮ বলে ১১ রান করে সাজঘরে ফিরতে হয় তাকে। সামিত প্যাটেলও সুবিধা করতে পারেননি (৩)। ড্যারেন স্যামি ১৮ বলে একটি চার আর দুটি ছক্কায় করেন ২৯ রান। ফরহাদ রেজা রান আউট হয়ে ফেরার আগে কোনো রানই করতে পারেননি। জেমস ফ্রাঙ্কলিন ২২ বলে একটি করে চার ও ছক্কায় ২৬ রান করে অপরাজিত থাকেন। আর ৫ বলে ১৫ রান করে শেষ বলে রানআউট হন মেহেদি হাসান মিরাজ।
রংপুরের দলপতি মাশরাফি ৪ ওভারে এক উইকেট পেলেও রান দিয়েছেন মাত্র ১৮, সাথে ছিল একটি মেডেন। ৪ ওভারে ২০ রান খরচায় দুটি উইকেট পান নাজমুল ইসলাম। ৪ ওভারে ৩৪ রানের বিনিময়ে দুটি উইকেট পান মালিঙ্গা। সোহাগ গাজী ১ ওভারে ৫ রান খরচায় নেন একটি উইকেট। থিসারা পেরেরা ২ ওভারে ২৩ রান দিয়ে উইকেটশূন্য থাকেন। রবি বোপারা ১ ওভারে ৯ রান খরচ করে কোনো উইকেট পাননি। ৪ ওভারে ৪৩ রান দিয়েও উইকেটের দেখা মেলেনি রুবেল হোসেনের।
দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে আগে ব্যাট করতে নামে রাজশাহীর বিদেশি খেলোয়াড়দের তালিকায় লুক রাইট, সামিত প্যাটেল, ড্যারেন স্যামি, জেমস ফ্রাঙ্কলিন, কেরসিক উইলিয়ামস। আর দেশি তারকাদের মধ্যে মুমিনুল হক, রনি তালুকদার, মুশফিকুর রহিম, ফরহাদ রেজা, মেহেদি হাসান মিরাজ আর নিহাদুজ্জামান।
এদিকে, মাশরাফির নেতৃত্বে খেলেন শাহরিয়ার নাফিস, অ্যাডাম লিথ, জনসন চার্লস, রবি বোপারা, থিসারা পেরেরা, মোহাম্মদ মিঠুন, রুবেল হোসেন, সোহাগ গাজী, নাজমুল ইসলাম এবং লাসিথ মালিঙ্গা।
এর আগে বিপিএলের এবারের আসরের প্রথম ম্যাচে ঢাকা ডায়নামাইটসকে বড় ব্যবধানে হারিয়ে জয় পেয়েছে সিলেট সিক্সার্স। ঢাকা ডায়নামাইটসের ১৩৬ রানের দেয়া লক্ষ্য মাত্র এক উইকেট হারিয়ে ১৬.৫ ওভারেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় সিলেট।
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে গড়পড়তা ১৬০-১৭০ রান যখন নিয়মিতই হয়, সেখানে ১৩৬ রান একটু ‘কমই’! এই কম রান সহজেই টপকিয়ে প্রথম ম্যাচে নিজেদের জয় তুলে নেয় সিলেট সিক্সার্স।
ঘরের মাঠ, চেনা পরিবেশ, প্রায় ১৭ হাজার দর্শকের পুরো সমর্থন। সিলেট সিক্সার্সকে নিয়ে তাই প্রত্যাশার পারদ বাড়ছিল আগে থেকেই। বিপিএলে প্রথমবারের মতো আসা এই ফ্র্যাঞ্চাইজিও দিচ্ছিল লড়াইয়ের ইঙ্গিত।
কিন্তু প্রতিপক্ষ যে ঢাকা ডায়নামাইটস! বিপিএলের পঞ্চম আসরে কাগজে-কলমে সবচেয়ে শক্তিশালী দল ডায়নামাইটস। সাকিব আল হাসানের এই দলের সাথে উদ্বোধনী ম্যাচে পারবে তো লড়াই করতে সিলেট সিক্সার্স? এই প্রশ্নটা ম্যাচ শুরুর আগপর্যন্ত সিলেটের বাতাসে ঘুরপাক খাচ্ছিল। কিন্তু ওই পর্যন্তই! ম্যাচ শুরুর পর উড়ে গেল সব সংশয়, সিলেট সিক্সার্স হয়ে ওঠলো অদম্য, দুরন্ত। স্রেফ যেন উড়ে গেল ঢাকা ডায়নামাইটস!
ঘরের মাঠে উইকেটের দুরদান্ত এক জয়ে তাই বিপিএলের পঞ্চম আসরে উড়ন্ত সূচনা করলো সিলেট সিক্সার্স।
ঢাকা ডায়নামাইটস ১৩৬ রানের লক্ষ্য দিয়েছিল সিলেট সিক্সার্সকে। সেই লক্ষ্যে খেলতে নেমে শুরুটা কি অসাধারণ হলো সিক্সার্সদের! শ্রীলঙ্কান উপুল থারাঙ্গা আর উইন্ডিজ আন্দ্রে ফ্লেচার ছুটালেন চার-ছক্কার ফুলঝুরি। ৯ ওভারেই স্কোরবোর্ডে রান ওঠলো ৭৭। ৭৬ বলে শতরানের জুটি গড়লেন এ দুই ব্যাটসম্যান। এর মধ্যে ৩৮ বলে অর্ধশতকের ঘরে পৌঁছে যান আন্দ্রে ফ্লেচার। আর আবু হায়দার রনিকে দারুণ এক শটে ডিপ মিড উইকেট দিয়ে চার হাঁকিয়ে ৩৭ বলে অর্ধশতক পূরণ করেন থারাঙ্গা।
এরপরও থামার ব্যাটিং ঝড় থামানোর লক্ষণই ছিল না থারাঙ্গা-ফ্লেচার জুটির। সাত বোলার ব্যবহার করেও এ জুটিকে আটকাতে পারছিলেন না ডায়নামাইটস অধিনায়ক সাকিব। অবশেষে ১২৫ রানের জুটি ভাঙে ফ্লেচারের বিদায়ে। আদিল রশীদকে তুলে মারতে গিয়ে ডিপ মিড উইকেটে লুইসের ক্যাচ হয়ে ফিরেন ফ্লেচার। কিন্তু ৫১ বলে পাঁচ চার আর তিন ছয়ে ৬৩ রান করে ডায়নামাইটসের সর্বনাশটা ঠিকই করে যান ফ্লেচার। বাকি কাজটুকু নির্বিঘ্নেই শেষ করেন থারাঙ্গা আর সিলেট সিক্সার্সের আইকন সাব্বির রহমান। ১৯ বল বাকি থাকতেই জয়ের বন্দরে নোঙর ফেলে সিলেটের এই ফ্র্যাঞ্চাইজি।
৪৮ বলে পাঁচ চার আর দুই ছয়ে ৬৯ রানে অপরাজিত থাকেন থারাঙ্গা। সাথে ছিলেন ২ রান করা সাব্বির।
এর আগে টসে জিতে ফিল্ডিং নেন সিলেট সিক্সার্সের অধিনায়ক নাসির হোসেন। নিজের সিদ্ধান্তের যথার্থতা প্রমাণ করে প্রথম ওভারেই ফিরিয়ে দেন ডায়নামাইটসের উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান মেহেদী মারুফকে। এরপর কিছুটা এভিন লুইস ও সাঙ্গাকারা কিছুটা প্রতিরোধ গড়েন। তাদের বিদায়ের পর নিয়মিত উইকেট হারাতে থাকে সাকিব আল হাসানের দল। শেষপযন্ত নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ৭ উইকেটে ১৩৬ রান তুলেছে ঢাকা ডায়নামাইটস।
শুরুতেই ফিরে যান মেহেদী মারুফ। নাসিরের বলে হুইটলির হাতে ক্যাচ দিয়ে শুন্য রানে মারুফ যখন সাজঘরে ফিরছিলেন, ঢাকা ডায়নামাইটসের রান তখন মাত্র ২। এরপর এভিন লুইস ও কুমার সাঙ্গাকারার জুটি জমে ওঠে। ৬ ওভার ৫ বলে তাদের ৫৪ রানের পার্টনারশিপ ভাঙে দলীয় ৫৬ রানে। আবারও ‘ঘাতক’ সেই নাসির। আবুল হাসান রাজুর হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে ফিরে যান লুইস। তার ২৪ বলে ২৬ রানের ইনিংসে ছিল তিনটি চার ও একটি ছয়।
এরপর স্কোরকার্ডে আরো ১০ রান যোগ হতেই ফিরে যান সাঙ্গাকারা। ২৮ বলে তিন চার আর এক ছয়ে ৩২ রানে প্লাঙ্কেটের বলে রাজুর হাতে ক্যাচ তুলে দেন শ্রীলঙ্কার সাবেক এই উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান। উইকেটে তিথু হতে না হতেই রানআউটের ফাঁদে পড়ে সাজঘরের পথ ধরেন মোসাদ্দেক হোসেন (১১ বলে ৬)। দলের রান এক শ’ পেরোর আগেই (৯৮ রানে) ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিধ্বংসী ব্যাটসম্যান কাইরন পোলার্ডও ফিরে যান। আবুল হাসান রাজু নিরীহ এক বলে মিড-অফে নাসিরের হাত ক্যাচ হন পোলার্ড (৭ বলে ১১ রান)।
দ্রুত ফিরে যেতে পারতেন ক্যামেরন ডেলপোর্টও। তার রান যখন ১, তখন নিজের বলে নিজেই ক্যাচ ছাড়েন শুভাগত হোম। ‘জীবন’ পাওয়ার এক বল পরেই শুভাগতের বলে ছক্কা হাঁকান ডেলপোর্ট। তবে পরের ওভারেই ক্রমেই বিপজ্জনক হয়ে ওঠা ঢাকা ডায়নামাইটসের দলপতি সাকিব। সাব্বির রহমানের বলে মিড-অফে থাকা প্লাঙ্কেটের হাতে বল তুলে দিলে শেষ হয় সাকিবের ২১ বলে ২৩ রানের ইনিংস। উইকেট পড়ার ‘ধারাবাহিকতায়’ পরের ওভারেই শেষ আদিল রশীদ। রাজুর বলে ফ্লেচারের হাতে মিড-উইকেটে ক্যাচ হওয়ার আগে ৬ বলে ৩ রান আসে রশীদের ব্যাট থেকে।
EDITOR & PUBLISHER :
DR. ARIF AHMED MOMTAZ RIFA
MOBILE : 01715110022
PHONE : 0821 716229
Office : Central Market (1st floor),
Bandar Bazar (Court Point),
Sylhet – 3100, Bangladesh.
E-mail : sylhetsangbad24@gmail.com
Hello : 01710-809595
Design and developed by M-W-D