বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এম কে আনোয়ার আর নেই

প্রকাশিত: ১০:৪৭ পূর্বাহ্ণ, অক্টোবর ২৪, ২০১৭

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এম কে আনোয়ার আর নেই

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এম কে আনোয়ার আর নেই। সোমবার দিবাগত রাত সোয়া একটার দিকে রাজধানীর এ্যালিফ্যান্ট রোডে নিজ বাসভবনে তিনি ইন্তেকাল করেন (ইন্নালিল্লাহি …রাজেউন)।

মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৮৪ বছর। দীর্ঘদিন থেকে বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতায় ভুগছিলেন।

অসুস্থতার কারণে দীর্ঘদিন তাকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকেও অংশ নিতে দেখা যায়নি। সর্বশেষ সোমবার রাতের বৈঠকেও তিনি যোগ দিতে পারেননি।

পরিবারের সদস্যরা জানান, সকাল ১০টায় কাঁটাবন মসজিদে, বেলা ১২টায় নয়া পল্টনে বিএনপি কার্যালয়ের সামনে, জোহরের পর সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় এম কে আনোয়ারের জানাজা হবে।

পরে এই বিএনপি নেতার মৃতদেহ নিয়ে যাওয়া হবে তার নির্বাচনী এলাকা কুমিল্লার হোমনায়। সেখানে জানাজার পর পারিবারিক কবরাস্থানে তাকে দাফন করা হবে।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সকালে এলিফ্যান্ট রোডে গিয়ে শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেনা জানান।

পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, ১৯৫৩ সালে সিএসপি কর্মকর্তা হিসেবে সরকারি চাকরিতে যোগ দেন এম কে আনোয়ার। পাকিস্তান ও বাংলাদেশ সরকারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্বপালন করেন তিনি। এম কে আনোয়ার ১৯৯০ সালে রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ কর্মকর্তা কেবিনেট সচিব হিসেবে অবসরে যান । চাকরি থেকে অবসর নেওয়ার পর ১৯৯১ সালে বিএনপির রাজনীতিতে যোগ দেন তিনি।

কুমিল্লার হোমনা আসন থেকে এই নেতা একাধিক বার জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। দুইবার মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্বপালন করেন।

এমকে আনোয়ারের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তারা মরহুমের রুহের মাগফেরাত কামনা এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনাও জানিয়েছেন।

হাইকোর্টে এমকে আনোয়ারের মানহানি মামলা স্থগিত

চলতি বছরের ৩ জুলাই বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এমকে আনোয়ারের বিরুদ্ধে মানহানি মামলা ছয় মাসের জন্য স্থগিত করে হাইকোর্ট। ওইদিন বিচারপতি মো. মিফতাহ উদ্দিন চৌধুরী ও বিচারপতি এ এন এম বসির উল্লাহর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

এ মামলা কেন বাতিল করা হবে না, তা জানতে রুল জারি করে হাইকোর্ট।

এমকে আনোয়ারের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী সগীর হোসেন লিয়ন ও রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ একেএম মনিরুজ্জামান কবির।

উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের ৫ মে হেফাজতে ইসলামের ঢাকা অবরোধে বায়তুল মোকাররম এলাকায় পবিত্র কোরান শরীফে আগুন দেওয়ার ঘটনা স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা দেবাশীষের নেতৃত্বে হয়েছে, এমকে আনোয়ার এমন বক্তব্য দিয়েছেন অভিযোগের প্রেক্ষিতে ঐ বছরের ৭ মে মামলা দায়ের করেন দেবাশীষ বিশ্বাস।

ঐ দিনই আদালতে এমকে আনোয়ারের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। পরে তিনি হাইকোর্ট থেকে দুই সপ্তাহের অন্তর্বর্তী জামিন পান।

হাইকোর্টের জামিনের মেয়াদ শেষে ২০১৩ সালের ২৭ মে তিনি সিএমএম আদালতে আত্মসমর্পণ করলে বিচারক জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে জেলহাজতে পাঠান। পরে অবশ্য তিনি জামিনে মুক্ত হন।

মামলায় ২০১৪ সালের ৭ অক্টোবর এমকে আনোয়ারের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে আদেশ দেন ঢাকার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম আলী মাসুদ শেখ। বর্তমানে মামলাটি সাক্ষ্যগ্রহণ পর্যায়ে রয়েছে।

সগীর হোসেন লিয়ন জানান, অভিযোগ গঠনের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আবেদন করেন এমকে আনোয়ার। এ আবেদনের শুনানি নিয়ে সোমবার হাইকোর্ট মামলার কার্যাক্রমের ওপর স্থগিতাদেশ দিয়ে রুল জারি করেছেন।