রোহিঙ্গাদের দুর্দশা নিয়ে চেচনিয়ায় বিশাল সমাবেশ

প্রকাশিত: ২:২৮ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ৫, ২০১৭

রোহিঙ্গাদের দুর্দশা নিয়ে চেচনিয়ায় বিশাল সমাবেশ

মস্কো: মায়ানমারের মুসলিম রোহিঙ্গা সংখ্যালঘুদের দুর্দশা নিয়ে রাশিয়ার চেচনিয়ায় সরকারিভাবে আয়োজিত সোমবারের এক সমাবেশে হাজার হাজার লোক যোগ দিয়েছে।

স্থানীয় লৌহমানব হিসেবে পরিচিত রমজান কাদিরভ ক্রেমলিনের সাথে ভিন্নতা প্রকাশ করেই তিনি কাজটি করেছেন।

গত ২৫ আগস্ট মায়ানমারে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ার পর থেকে এ পর্যন্ত প্রতিবেশী বাংলাদেশে মোট ৮৭ হাজার রোহিঙ্গা উদ্বাস্তু প্রবেশ করেছে। মায়ানমারের যৌথ বাহিনী এবং বৌদ্ধ দুর্বৃত্তরা রোহিঙ্গাদের ওপর নির্মম নির্যাতন চালাচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

 দক্ষিণ রাশিয়ার মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ অঞ্চল চেচনিয়া লৌহমুষ্টিতে পরিচালনা করেন কাদিরভ। তিনি প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের কঠোর অনুগত। তবে সেইসাথে নিজেকে মুসলিম বিশ্বজুড়ে প্রভাবশালী ব্যক্তি হিসেবেও উপস্থাপন করতে চান।

মধ্য গ্রোজনিতে উপস্থিত বিপুল সংখ্যক লোকের উপস্থিতিতে কাদিরভ বলেন, ‘এই রক্তপাত বন্ধ করো। আমরা অপরাধীদের শাস্তি দাবি করছি। তদন্ত করে মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধকারীদের শাস্তি দিতে হবে।’ তার বক্তৃতা স্থানীয় টেলিভিশনে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়।

তিনি বলেন, আমি নিশ্চিত সারা বিশ্বের কোটি কোটি মানুষ আমাদের দাবি শুনবে।

কাদিরভ দাবি করেন, রুশ ককেশিয়াজুড়ে লাখ লাখ লোক তার দাবির সাথে একাত্মতা প্রকাশ করেছে।

তবে মস্কোর সরকারি নীতির পরিপন্থী অবস্থান নিয়ে কাদিরভের এ ধরনের সভা করা বিরল ঘটনা।

মায়ানমারের সর্বশেষ সহিংসতা নিয়ে রাশিয়া এখনো নীরব রয়েছে। এমন খবরও প্রকাশিত হয়েছে, চলতি বছরের প্রথম দিকে রাখাইন রাজ্যের পরিস্থিতি নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ-সংবলিত একটি জাতিসংঘ বিবৃতি আটকে দিয়েছিল রাশিয়া।

রাশিয়া ও মায়ানমারের মধ্যে মিত্রতাও রয়েছে। গত বছর দুই দেশ সামরিক সহযোগিতা চুক্তি করেছে। এতে মায়ানমারে সামরিক বিমান এবং গোলন্দাজ সরঞ্জাম পাঠাতে রাজি হয় রাশিয়া।

রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী রবিবার বলেন, তারা পরিস্থিতি ‘ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ’ করছেন। তিনি আরো বলেন, চলমান সশস্ত্র সঙ্ঘাত এবং এর ফলে বেসামরিক নাগরিক এবং নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের হতাহতের বিষয়টি উদ্বেগজনক।

কাদিরভের বিরুদ্ধেও মানবাধিকার সংস্থাগুলো মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ আনছে। তিনি ইতোপূর্বে মহানবিকে (সা.) নিয়ে কার্টুন প্রকাশ করায় ফরাসি ব্যাঙ্গ পত্রিকা শার্লি হেবদোর বিরুদ্ধে বিশাল বিক্ষোভের আয়োজন করেছিলেন।

এর আগে গত রবিবার মস্কোতে মায়ানমার দূতাবাসের বাইরে প্রায় এক হাজার মুসলিম সমবেত হয়ে রোহিঙ্গা নির্যাতনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানায়।