সেপ্টেম্বরের আগেই নবম ওয়েজবোর্ড গঠন : ঘোষণা তথ্যমন্ত্রীর

প্রকাশিত: ১১:৩৫ অপরাহ্ণ, আগস্ট ১৩, ২০১৭

সেপ্টেম্বরের আগেই নবম ওয়েজবোর্ড গঠন : ঘোষণা তথ্যমন্ত্রীর

তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেছেন, ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরের আগেই নবম ওয়েজবোর্ড গঠন করা হবে। তিনি বলেন, ‘পাঁচ বছর পর পর নতুন ওয়েজবোর্ড দেওয়ার বিধান রয়েছে। ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর মাসে পাঁচ বছর পূর্তি হবে। তার আগেই নবম ওয়েজবোর্ড বাস্তবায়ন করা হবে।’

আজ রোববার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪২তম শাহাদত বার্ষিকী উপলক্ষে সচিবালয়ে তথ্য অধিদফতরের সামনে ডিজিটাল আলোকচিত্র প্রদর্শনী উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

হাসানুল হক ইনু বলেন, ‘ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় ওয়েজবোর্ড বাস্তবায়নের ব্যাপারে আমরা তাগিদ দিয়েছি। কীভাবে ইলেকট্রনিক মিডিয়ার বন্ধুদের এর আওতায় আনা যায়, সে ব্যাপারে একটি প্রস্তাব উত্থাপন করতেও বলা হয়েছে। শিগগির তাদেরকেও ওয়েজবোর্ডের আওতায় নিয়ে আসা হবে।’

নবম ওয়েজবোর্ড বাস্তবায়নে পত্রিকার মালিকপক্ষের অসহযোগিতার কথা তুলে ধরে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘মালিকদের প্রতিনিধি আমরা পাইনি। প্রতিনিধি দেয়ার জন্য মালিকদের তাগাদা দিচ্ছি, বারবার অনুরোধ করছি। আমরা ধৈর্য্য ধরে তাদের তাগাদা দিচ্ছি, আশা করছি মালিকরা প্রতিনিধি দেবেন। মালিকদের প্রতিনিধি পেলেই আমরা তাৎক্ষণিকভাবে ঘোষণা করে দেব। নবম ওয়েজবোর্ড গঠনে তথ্য মন্ত্রণালয় সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।’

তথ্য মন্ত্রণালয় ওয়েজবোর্ডের বিরুদ্ধে নয় উল্লেখ করে হাসানুল হক ইনু বলেন, ‘তথ্য মন্ত্রণালয় সাংবাদিকদের নবম ওয়েজবোর্ড গঠনের বিরুদ্ধে, এটা সঠিক নয়। সাংবাদিকদের মধ্য থেকে নতুন ওয়েজবোর্ডের দাবি ওঠার সঙ্গে সঙ্গেই আমরা এ নিয়ে কাজ শুরু করি। তথ্য মন্ত্রণালয় যেখানে ওয়েজবোর্ডের চেয়ারম্যান নিয়োগ দিয়েছে, ৮০ ভাগ কাজ শেষ করেছে, সেখানে তথ্য মন্ত্রণালয় ওয়েজবোর্ডের বিরুদ্ধে এ কথাটা সঠিক নয়। বরং আমরা পক্ষেই আছি।’

‘সাংবাদিক বন্ধুদের পাশাপাশি কর্মচারী বন্ধুদের সঙ্গে আমরা একাধিকবার বসেছি। ওয়েজবোর্ড গঠনের ক্ষেত্রে কোনো লুকোচুরি নেই। সাংবাদিক ও কর্মচারীদের দাবির সঙ্গে তথ্য মন্ত্রণালয়ের মত এক। আমরা একে অপরের প্রতিপক্ষ নই, শত্রুও নই। যেখানে আমরা সবাই একই জায়গায় আছি সেখানে সাংবাদিক নেতৃবৃন্দের রাস্তায় মিছিল করার দরকার নেই। আপনারা শান্ত হোন, ধৈর্য্য ধরুন। আমাদের সঙ্গে আলোচনা করুন, ইনশা আল্লাহ ওয়েজবোর্ড বাংলাদেশে হবে।’

মন্ত্রী বলেন, ‘মালিকরা যদি প্রতিনিধি না দেন তবে এক তরফা মজুরি বোর্ড ঘোষণা করব কি না, এটা একটা কঠিন সিদ্ধান্ত। আমি সাংবাদিক ভাই-বোনদের মঙ্গল চাই। তারা যাতে ওয়েজবোর্ডের সুযোগটা পায়, সেজন্য এই পরিস্থিতির সম্মুখীন যদি হই তাহলে আমরা মনে করি বিএফইউজে, ডিইউজে সাংবাদিক নেতৃবৃন্দের সঙ্গে, সরকারের সঙ্গে, সবশেষে প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে। এই রকম এক তরফা ওয়েজবোর্ড গঠনের মধ্য দিয়ে আমার সাংবাদিক বন্ধুরা উপকার পাবেন কি না, এটি নিয়ে আমার সংশয় রয়েছে।’

হাসানুল হক ইনু বলেন, ‘সাংবাদিকপক্ষ ও মালিকপক্ষ দ্বিপাক্ষিক আলোচনা, ত্রিপাক্ষিক আলোচনার মধ্য দিয়ে ওয়েজবোর্ডের বিষয়টি চূড়ান্ত করা হয়। সেটা বাস্তবায়নের জন্য সরকার উদ্যোগ গ্রহণ করে।’

তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক উত্থান-পতনের কারণে পাঁচ বছর অন্তর ওয়েজবোর্ড দেয়া অতীতে সম্ভব হয়নি। কিন্তু শেখ হাসিনার সরকার ২০১৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসে বহু খাটাখাটনি করে ওয়েজবোর্ড দিতে সক্ষম হয়। ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর মাসে পাঁচ বছর পূর্ণ হবে। পাঁচ বছর পর যাতে গণমাধ্যমের কর্মীরা, সাংবাদিক বন্ধুরা নবম ওয়েজবোর্ডের সুযোগ পান সেজন্য তারা দাবি উত্থাপন করেছিলেন। এই দাবির সঙ্গে আমাদের কোনো বিরোধ নেই।’

তথ্য অধিদফতরের সামনে ডিজিটাল আলোকচিত্র প্রদর্শনী শুরু হয়েছে আজ (১৩ আগস্ট) রোববার থেকে। চলবে আগামী ১৯ আগস্ট পর্যন্ত। এখানে স্ক্রিনে বঙ্গবন্ধুর বিভিন্ন চিত্র ও ডকুমেন্টারি প্রদর্শন করা হবে।

অনুষ্ঠানে তথ্যমন্ত্রী হাসানুলক ইনু ছাড়াও প্রধান তথ্য কর্মকর্তা কামরুন নাহার, তথ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ও বেতারের মহাপরিচালক মো. নাসির উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।