ফেসবুকে শিশু নির্যাতনের ভাইরাল ভিডিও কুলাউড়ার নয়

প্রকাশিত: ৪:২৭ অপরাহ্ণ, আগস্ট ২, ২০১৭

ফেসবুকে  শিশু নির্যাতনের ভাইরাল ভিডিও কুলাউড়ার নয়

ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া শিশু নির্যাতনের একটি ভিডিও নিয়ে মঙ্গলবার দিনভর মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় তোলপাড় হয়েছে। প্রশাসনে চলেছে তোলপাড়। শিশু নির্যাতনের ওই ঘটনাটি কুলাউড়ার বলে ফেসবুকে বিভিন্ন জন দাবি করলেও স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন এমন দাবির সত্যতা পায় নি।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত শুক্রবার (২৮ জুলাই) কুলাউড়া উপজেলার হাজীপুর ইউনিয়নের হাজীপুর গ্রামের মৃত মছব্বির আলীর ছেলে ট্রলি চালক মো. আব্দুল আলীকে (২২) মারধর করে তার ট্রলির মালিক পারভেজ আহমদসহ কয়েকজন যুবক। আব্দুল আলীর অপরাধ ছিলো সে ছয়-সাত দিন থেকে ট্রলি চালাতে যায়নি।

এ ঘটনায় ট্রলি চালক আব্দুলের মা মাজহারুন বেগম বাদী হয়ে গত রোববার (৩০ জুলাই) কুলাউড়া থানায় ট্রলির মালিক পারভেজ আহমদকে ১নম্বর আসামী করে ৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন (নম্বর-৩২)। মামলার প্রেক্ষিতে পুলিশ মামলার ৪ নম্বর আসামী আব্দুল কুদ্দুস, ৫ নম্বর আসামী রিপন মিয়া, ৬ নম্বর আসামী নোমান মিয়াকে গ্রেপ্তার করে। মামলার পর থেকে ১ নম্বর আসামী ট্রলি মালিক পারভেজ আহমদ পলাতক রয়েছেন।

এদিকে এই ঘটনার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি শিশু নির্যাতনের ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। অনেকে ভিডিওর শিশুকে কুলাউড়ার ট্রলি চালক বলে ফেসবুকে শেয়ার করতে থাকেন। এ নিয়ে বিভিন্ন মহলে তোলপাড় শুরু হলে নড়েচড়ে বসে প্রশাসন।

ভিডিওটির সত্যতা যাচাই করতে মঙ্গলবার (১ আগস্ট) সরেজমিনে ঘটনাস্থলে ছুটে যান পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। গণমাধ্যমকর্মীরাও এলাকায় গিয়ে ঘটনার সত্যতা খোঁজেন দিনভর।

মৌলভীবাজার জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) সারোয়ার আলম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (কুলাউড়া সার্কেল) মো. আবু ইউছুফ, কুলাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শামীম মুছা ও পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) বিনয় ভূষণ রায় ট্রলি চালকের গ্রাম হাজীপুরে গিয়ে পুনরায় ঘটনার খোঁজ নেন। কিন্তু এই ভিডিওর কোন সত্যতা পাননি বলে জানান তাঁরা।

ট্রলি চালকের ঘটনার বিষয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কুলাউড়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. সাব্বির আহসান কুলাউড়ায় শিশু নির্যাতনের কোনো ঘটনা ঘটেনি। কিছুদিন আগে এক ট্রলি চালককে মারধর করা হয়েছে, তার বয়স ২২ বছর। ফেসবুকে যে নির্যাতনের ভিডিও ভাইরাল হয়েছে তা কুলাউড়ার নয়।

তিনি বলেন, ট্রলি চালককে নির্যাতনের ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। মামলার পর এজাহারনামীয় তিনজন আসামীকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে। অন্য আসামীদের ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। বিভ্রান্তিকর পরিস্থিতিতে ফেলার জন্য কেউ অন্য জায়গার ঘটনার ভিডিওটি কুলাউড়ার বলে ফেসবুকে ছেড়েছে।

এ ব্যাপারে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (কুলাউড়া সার্কেল) মো. আবু ইউছুফ মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টায় সিলেট সংবাদকে বলেন, ‘১৩ বছরের একটি বাচ্চা কিভাবে ট্রলি চালক হয়। বিভ্রান্তি ছাড়ানোর আগে বয়সের বিবেচনাটিও করা হয়নি। সরেজমিনে আমরা হাজীপুর ইউনিয়নে গিয়ে খোঁজ নিয়েছি। এই ভিডিওর কোন সত্যতা পাওয়া যায়নি। কুলাউড়ায় ২২ বছরের ট্রলি চালকের ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিভ্রান্তি ছাড়াতে কেউ হয়তো ভিডিওটি ছাড়ে। আর এতে সবাই বিভ্রান্তির বেড়াজালে জড়িয়ে পড়ে।’

ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া ওই ভিডিওতে দেখা যায়, দুজন যুবক একটি শিশুকে ব্যাপক মারধর করেছে। একপর্যায়ে মারধরকারী এক যুবক ওই শিশুকে আছাড় দিয়ে মাটিতে ফেলতেও দেখা যায়। এনিয়ে সোমবার থেকে ফেসবুকে চলছে ব্যাপক সমালোচনা।

সর্বমোট পাঠক


বাংলাভাষায় পুর্নাঙ্গ ভ্রমণের ওয়েবসাইট