ধোপাগুলের সন্ত্রাসী নাছির বাহিনীর হাত থেকে রক্ষা করুন

প্রকাশিত: ১:৩০ পূর্বাহ্ণ, জুলাই ৩০, ২০১৭

ধোপাগুলের সন্ত্রাসী নাছির বাহিনীর হাত থেকে রক্ষা করুন

সিলেটের এয়ারপোর্ট থানার ধোপাগুল এলাকার কুখ্যাত নাছির বাহিনীর বিরুদ্ধে একাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা ভাংচুর, চাঁদাবাজী, লুটপাট, মারধরসহ হয়ারানীর অভিযোগ করেছেন খুলনার আব্দুস ছত্তারের পুত্র পাথর ব্যবসায়ী আব্দুল গফফার। তিনি বলেন ‘সন্ত্রাসী নাছির বাহিনীর হাত থেকে আমাকে রক্ষা করুন’।

শনিবার দুপুরে সিলেট জেলা প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ধোপাগুল এলাকার কুখ্যাত সন্ত্রাসী নাছির ও তার বাহিনীর সদস্যরা ঐ এলাকায় চুরি ডাকাতি চাঁদাবাজী অপহরণ মাদক ব্যবসা চোরাচালান পাহাড়কাটা ভূমি দখল ও সরকারি গাছ কাটার মতো অপরাধের সাথে জড়িত।

এসব কাজে জড়িত রয়েছে নাছির বাহিনীর ইউসুফ মোকিম কুতুব বুলবুল বংলা কবির আজিম আব্দুল কাদিরসহ আরও ৩০/৩৫ জন সদস্য। তাদের মধ্যে আছে কয়েকজন নারীও। এদের মধ্যে কয়েকজন কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার ভাংচুরের আসামী। নাছির ও ইউসুফের বিরুদ্ধে এয়ারপোর্ট এবং কোতোয়ালী থানায় একাধিক জিডিও রয়েছে।

গফফার বলেন, ২০১৫ সালের ২৭ জানুয়ারী নাছির ও তার বাহিনী আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দেশ বাংলা ট্রেডিং এ হামলা চালিয়ে কর্মচারিদের মারধোর করে ৩০ লক্ষ টাকার পাথরসহ অফিসের মূল্যবান কাগজপত্র ডকুমেন্ট মোবাইল সেট লুট করে নিয়ে যায়। এ ব্যাপারে এয়ারপোর্ট থানায় মামলা করতে গেলে তারা মামলা নিতে অপারগতা প্রকাশ করে। উল্টো ৩০ জানুয়ারি তারা মো. আবু ইউসুফকে বাদী সাজিয়ে আমার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে।

আমার মামলা না নেয়ায় আমি র‌্যাব-৯ ও অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনারের কাছে মৌখীক অভিযোগ করলে ঘটনার ৪ মাস ৮ দিন পর ২০১৫ সালের ৪ মে আমার মামলা (নং০২, জিআর মামলা ৭৫/২০১৫) রেকর্ড করা হয়।

মামলা তদন্তের ব্যাপারে ২৭ জুন ২০১৫ থানায় গেলে সাবেক এসি মোল্লা শাহীন, এ এস আই রফিক, ও লোকমানের সামনে দায়েরকৃত মামলা প্রত্যাহার করতে বলেন। আমি অস্বীকার করলে রফিক ও লোকমান আমার নগদ ৩ হাজার টাকা এবং মোবাইলসেট কেড়ে নিয়ে দুহাত বেঁধে ক্রস ফায়ারের হুমকী দেন ও মারপীট করেন।

তারপর আমাকে নিয়ে যাওয়া হয় একটি নির্জন চা বাগানে। সেখানে নাছির ইউসুফ ও কুতুবের হাতে আমাকে তুলে দিলে তারা পুলিশের কাছ থেকে বন্দুক কেড়ে নিয়ে বাট দিয়ে আমাকে নির্দয়ভাবে মারতে থাকে। এক পর্যায়ে পানি খেতে চাইলে তারা আমাকে মদের বোতল ধরিয়ে দেয়। এসময় একটি ফোন বেজে উঠলে তারা ‘জি স্যার’ ‘জি স্যার’ করে এবং বলে আমি ওকে নিয়ে যাচ্ছি। এরপর তারা আমাকে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়।

ডাক্তার ভর্তির কথা বললেও তারা প্রেসক্রিপশন নিয়ে থানা হাজতে চলে আসে এবং সেখানে বিবস্ত্র করে ভিডিওচিত্র ধারণ করে হুমকি দেয় যে বাড়াবাড়ি করলে ভিডিওটি ইন্টারনেটে ছেড়ে দিবে। পরে এয়ারপোর্ট থানার মামলা নং ১৪, জিআর ১০৬ মুলে আমাকে আদালতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।

ব্যবসায়ী গফফার এরপর বলেন, তারা মেডিকেলের কাগজপত্র দেখিয়ে আমাকে জেল হাজতে পাঠিয়ে দেয়। আমি সেখানে চিকিৎসা গ্রহন করি এবং ৯ দিন পর জামিনে বেরিয়ে আসি। ঐ বছরের ২৭ জুলাই আমার মা মারা গেলে আমি খুলনায় চলে যাই।

২ আগস্ট ১৫ তারিখে সন্ত্রাসী বাহিনী আমার দ্বিতীয় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান মেসার্স উম্মি মটর্সে হামলা চালিয়ে ৭ লক্ষ টাকার মালামাল নাছিরের নিজস্ব ট্রাক দিয়ে লুট করে নিয়ে যায়। সংবাদ পেয়ে আমি সিলেট এসে পৌঁছালে অজ্ঞাতনামা ৪ সন্ত্রাসী আমার মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে সিলেট ত্যাগ না করলে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। প্রাণের ভয়ে আমি সিলেট ছেড়ে যেতে বাধ্য হই।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও বলেন, গত ৮ জুন ২০১৭ তারিখে আমি সিলেট ফিরে এলে নাছির বাহিনীসহ অজ্ঞাত আরও অনেকে আমাকে হত্যার হুমকী দেয়। এ ব্যাপারে আমি এয়ারপোর্ট থানায় মামলা (নং ১৭৭/২০১৭) দায়ের করি। বর্তমানে মামলাটি বিচারাধীন। গফফার নাছির বাহিনীর বিরুদ্ধে অন্যের জমি দখল এবং মাদক ব্যবসারও অভিযোগ করেন।

সব শেষে তিনি কুখ্যাত নাছির বাহিনীর হাত থেকে রক্ষা পেতে এবং তাদের উপযুক্ত শাস্তি নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।

সর্বমোট পাঠক


বাংলাভাষায় পুর্নাঙ্গ ভ্রমণের ওয়েবসাইট