বিএনপির আন্দোলন কোনো ব্যক্তি বা দলের জন্য নয় : ফখরুল

প্রকাশিত: ১:৪৬ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ১৯, ২০১৭

বিএনপির আন্দোলন কোনো ব্যক্তি বা দলের জন্য নয় : ফখরুল

বিএনপির আন্দোলন শুধুমাত্র কোনো ব্যক্তি বা দলের জন্য নয় বলে মন্তব্য করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তিনি বলেন, আজকে যে আন্দোলন চলছে সেটা কোনো ব্যক্তি বা দলের জন্য নয়। এই আন্দোলন মানুষের অধিকার আদায়, দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষার আন্দোলন।

বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত এক মানববন্ধনে তিনি এসব কথা বলেন।

‘রক্ত দিয়ে এনেছি স্বাধীনতা, জীবন দিয়ে রক্ষা করবো সার্বভৌমত্ব শীর্ষক’ এ মানববন্ধনের আয়োজন করে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল।

বাংলাদেশের মানুষ একটা কারাগারের মধ্যে পড়ে গেছে মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, সেই কারাগার থেকে অবশ্যই বেরিয়ে আসতে হবে। তাই জনগণকে আহ্বান করবো আসুন- আমাদের ন্যায্য অধিকার আদায় ও রক্ষায় ঐক্যবদ্ধ হই।

তিস্তাসহ অভিন্ন ৫৪ নদীর ন্যায্য হিস্যার দাবি আদায়ে জাতিসংঘকে সম্পৃক্ত করতে সরকারকে পরামর্শ দিয়ে বিএনপির এই নীতিনির্ধারক বলেন, আপনারা পানি আনতে ব্যর্থ হয়েছেন, দাবি আদায়ে ব্যর্থ হয়েছেন।

এবার তিস্তাসহ আমাদের ন্যায্য হিস্যা আদায়ের দাবি জাতিসংঘে তুলে ধরুন এবং সমস্যা সমাধানে তাদেরকে সম্পৃক্ত করুণ। কারণ আমরা কোনো দয়া চাই না, এটা আমাদের ন্যায্য অধিকার।

তিনি বলেন, আজকের এই মানব বন্ধন এটাই প্রমাণ করেছে দেশের মানুষ তাদের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব রক্ষার ক্ষেত্রে কোনো দিন আপোস করবে না। একটি কথা আমরা (বিএনপি) পরিষ্কার করে বলতে চাই- বাংলাদেশে ১৯৭১ সালে আমরা যারা স্বাধীনতা যুদ্ধ করেছিলাম। আমরা কারো দয়ায় এই স্বাধীনতা পাইনি। আমাদের স্বাধীনতা এসেছে লাখো মানুষের রক্তের বিনিময়ে, মা-বোনদের ইজ্জতের বিনিময়ে। আমরা দীর্ঘ ৯ মাস লড়াই করে এই বাংলাদেশকে মুক্ত করেছি। আর সেই মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনা ছিল গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থা। কিন্তু দুর্ভাগ্যের কথা আজকে স্বাধীনতার ৪৬ পরে সেই গণতন্ত্র নেই, গণতন্ত্রকে হরণ করা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর প্রসঙ্গ টেনে বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেন, কয়েকদিন আগে প্রধানমন্ত্রী ভারত সফরে গিয়ে অনেকগুলো চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক সাক্ষার করে এসেছেন। কিন্তু আমাদের হাজারো মানুষের প্রাণের দাবি সেই তিস্তা পানির তিনি (প্রধানমন্ত্রী) চুক্তি করতে পারেনি। শুধু তিস্তা চুক্তিই নয়, অভিন্ন ৫৮টি নদীর ন্যায্যা হিস্যার কোনো চুক্তি করতে পারেননি।

তিনি বলেন, অথচ গত কয়েক বছর ধরে তারা যে বিষয়গুলো ছিল বাংলাদেশের জন্য ট্রাম্পকার্ড, যা ছিল বাংলাদেশের জন্য ধরকষাকষি বিষয় গুলো সেগুলো তিনি (প্রধানমন্ত্রী) অবলীলায় ভারতের কাছে তুলে দিয়ে এসেছেন। ট্রানজিট দিয়েছেন, ব্যবসা বাণিজ্যর সুযোগ সৃষ্টি করে দিয়েছেন অথচ আমরা এখন পর্যন্ত কিছুই পাইনি। পেয়েছি শুধুমাত্র আশ্বাস।

ভারত থেকে ফিরে এসে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া (পানি ম্যাংগা, ইলেকট্রিসিটি মিল্যা—কুছ তো মিল্যা।) বক্তব্যের সমালোচনা করে বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, অর্থ্যাৎ আমাদের অবস্থা হয়েছে কুছ তো মিল্যা।

তিনি বলেন, যা পেয়েছি এতেই খুশি। এই যে নতজানু মনোভাব। এ মনোভাব দিয়ে কখনো দাবি আদায় করা যাবে না। আদায় করা যায় না। এবং এই সরকার ব্যর্থ হচ্ছে কারণ এরা জনগণের দ্বারা নির্বাচিত নয়। জোর করে ক্ষমতায় বসে আছে, দখল করে আছে। তাই যারা তাদেরকে ক্ষমতায় টিকিয়ে রেখেছে তাদের কাছে আমাদের কোনো বিষয়ে ন্যায্য দাবি সেভাবে পেশ করতে পারছেন না বলেও অভিযোগ করেছেন তিনি।

এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন, আয়োজক সংগঠনের সিনিয়র সহসভাপতি হাজী আবুল হোসেন, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক  লে. কর্ণেল (অব) জয়নুল আবেদীন, স্বনির্ভর বিষয়ক সম্পাদক শিরিন সুলতানা প্রমুখ।