‘আব্বু’ বলে ডেকেছে নার্গিস

প্রকাশিত: ১:৩৮ পূর্বাহ্ণ, অক্টোবর ২৬, ২০১৬

রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সিলেট সরকারি মহিলা কলেজের শিক্ষার্থী খাদিজা আক্তার নার্গিসের শারীরিক অবস্থা এখন আগের চেয়ে অনেক ভালো। বাবা-মাকে চিনতে পেরেছেন তিনি।

মঙ্গলবার তার বাবাকে ‘আব্বু’ বলে ডেকেছেন। গত ৩ অক্টোবর থেকে অচেতন অবস্থায় ছিলেন। স্বজনেরা জানিয়েছেন এ খবর।

সৌদিপ্রবাসী মাশুক মিয়া মেয়ের ওপর হামলার খবর পেয়ে ৬ অক্টোবর দেশে ফেরেন। একই দিনে দেশে আসেন খাদিজার ভাই শাহীন আহমেদ। চীনের একটি মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী শাহীন সোমবার চীনে ফিরে গেছেন।

রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন খাদিজা আক্তার এখন হাই ডিপেন্ডেন্সি ইউনিটে আছেন। তার শরীর থেকে কৃত্রিম শ্বাসপ্রশ্বাসের যন্ত্রপাতি ও খাওয়ানোর জন্য যন্ত্রপাতি খুলে নেওয়া হয়েছে। শারীরিক অবস্থার আরো উন্নতি হওয়ায় হাই ডিপেন্ডেন্সি ইউনিট থেকে খাদিজাকে কেবিনে স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন চিকিৎসকেরা।

খাদিজা আক্তারের চিকিৎসক স্কয়ার হাসপাতালের নিউরোসার্জারি বিভাগের পরামর্শক রেজাউস সাত্তার জানিয়েছেন, মস্তিষ্কে অস্ত্রোপচারের পর খাদিজার শরীরের ডান দিকে সাড়া ফিরলেও, খাদিজা বাম হাত-বাম পা নাড়তে পারছিলেন না। এই সপ্তাহের শুরু থেকে খাদিজা বাম পাও সামান্য নাড়তে পারছেন। তবে বাম পা নাড়তে তার খুব কষ্ট হচ্ছে।

মঙ্গলবার রাতে খাদিজার বাবা মাশুক মিয়া সাংবাদিকদের বলেন, ‘খাদিজা আজ আমাকে আব্বু বলে ডেকেছে। ও আমাকে ওর মা কে ও আমাদের আত্মীয়-স্বজনদেরও হালকা-হালকা চিনতে পারছে। আমি নিজে শুনেছি। আমার মনে হলো ব্যথা পেয়ে গোঙাচ্ছে। চিকিৎসকেরা আমাদের বলেছেন, দু/চার দিনের মধ্যেই ওকে কেবিনে দিয়ে দেবেন।’

তিনি জানান, খাদিজা এখন কোনো কৃত্রিম যন্ত্রের সাহায্য ছাড়াই অল্প-স্বল্প খাওয়া দাওয়া করছেন। বেশির ভাগ সময়ই তাকে তরল খাওয়ার দেওয়া হচ্ছে।

চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে মাশুক মিয়া বলেন, তারা ধারণা করছেন দু/তিন মাস পরে খাদিজার শারীরিক অবস্থার উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হবে।

প্রসঙ্গত, ৩ অক্টোবর ডিগ্রি দ্বিতীয় বর্ষের পরীক্ষা দিতে এমসি কলেজ ক্যাম্পাসে গিয়েছিলেন সিলেট সরকারি মহিলা কলেজের শিক্ষার্থী খাদিজা। বিকালে পরীক্ষা দিয়ে বেরিয়ে আসার সময় ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাকে কুপিয়ে গুরুতর আহত করেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবি) শাখা ছাত্রলীগের সহসম্পাদক বদরুল আলম (২৭)। পরে অন্য শিক্ষার্থীরা বদরুলকে পিটুনি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করে।

ঘটনার দিন গুরুতর আহত অবস্থায় খাদিজাকে প্রথমে সিলেটে এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরদিন তাকে ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে খাদিজার দুই দফা অস্ত্রোপচার করেন বিশেষজ্ঞ চিকিত্সকরা। অস্ত্রোপচার শেষে তাকে টানা ৯২ ঘণ্টা লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়। পরে ১২ অক্টোবর সকালে তার লাইফ সাপোর্ট খোলা হয়।

এ ঘটনায় খাদিজার চাচা আবদুল কুদ্দুস বাদী হয়ে সিলেট শাহপরাণ থানায় বদরুল আলমকে আসামি করে হত্যা চেষ্টা মামলা করেন। এরই মধ্যে ছাত্রলীগ ক্যাডার বদরুল খাদিজার ওপর হামলার কথা স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।

সর্বমোট পাঠক


বাংলাভাষায় পুর্নাঙ্গ ভ্রমণের ওয়েবসাইট